দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) থেকে আওয়ামী লীগ আমলে চাকরিচ্যুত ২৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আবার নিজ নিজ পদে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা ফেডারেশনের প্রশাসক বরাবর যোগদানপত্র জমা দেন। কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে তাঁরা আগের পদে যোগ দিয়েছেন। যদিও এফবিসিসিআই তাঁদের চাকরি পুনর্বহালের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআইয়ের কার্যালয়ের প্রশাসন বিভাগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চাকরিচ্যুত ২৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী সশরীর হাজির হয়ে যোগদানপত্র জমা দেন। এতে তাঁরা পদোন্নতিসহ এফবিসিসিআইয়ে পুনর্বহালের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসককে অনুরোধ জানান।
৬ নভেম্বর বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরিচ্যুত এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দেন। আদালত তাঁদের বেতন-ভাতাসহ সার্ভিস বেনিফিট-সংক্রান্ত আবেদন আগামী এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, করোনার সময় শেখ ফজলে ফাহিম এফবিসিসিআইয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে ৬২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেন। পরবর্তী সময়ে অবশ্য বেশ কয়েকজনকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়। তবে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া ২৬ জনসহ কয়েকজনকে পুনর্বহাল করা হয়নি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের চাকরিবিধি অনুযায়ী, চাকরিচ্যুতদের প্রাপ্য সুবিধা পাওয়া থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। প্রাপ্য সুবিধার মাত্র ২৫ শতাংশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁদের আইনি সুরক্ষা নেওয়া থেকে বিরত রাখতে হুমকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তখন এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মতিঝিল থানায় জিডি করতে বাধ্য হন বলে জানান।
এফবিসিসিআইয়ের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ৬ অক্টোবর চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করেন। সেই সঙ্গে চাকরিবিধি অনুযায়ী প্রাপ্য সুবিধা দাবি করেন তাঁরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও ২৭ অক্টোবর এফবিসিসিআইয়ের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহালের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাকরিচ্যুত ২৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিষয়ে হাইকোর্টের একটি রুল জারি হওয়ার বিষয়টি আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে জেনেছি। আমি সাময়িক সময়ের জন্য দায়িত্বে রয়েছি। ২৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগ বিষয়ে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’