‘জোর’ করে সভাপতি হন আনভীর, পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগের দাবি

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ এবং পরবর্তী সময়ে সাধারণ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের দাবি করেছে সমিতির সদস্যদের একটি অংশ।

তাদের অভিযোগ, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর জোর করে সমিতির সদস্যপদ নেন। এমনকি বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের নামে সদস্যপদ নেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি চালু হয়নি। তারপর প্রভাব খাটিয়ে ভোট ছাড়া সমঝোতার মাধ্যমে সমিতির সভাপতির পদ দখল করেন। তিনি টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের সমিতির সদস্যপদ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটিতে নিয়োগ দিয়েছেন।

আজ বুধবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটে জুয়েলার্স সমিতির আগের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করে সংগঠনের সদস্যদের একটি অংশ। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন জুয়েলার্স সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান। উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। ছোট জায়গার কারণে অনেক সাংবাদিক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করতে পারেননি। পরে আরেক দফা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সমিতির সাবেক দুই নেতা।

জানতে চাইলে সাবেক সভাপতি এনামুল হক খান দাবি করে বলেন, ‘তিন বছর আগে সায়েম সোবহান আমাকে তাঁর বাসায় চা চক্রের দাওয়াত দেন। সেখানে যাওয়ার পর আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা প্রকাশযোগ্য নয়। একপর্যায়ে সায়েম সোবহান আমাকে বলেন, রুহুল আমিন রাসেল (বর্তমানে সমিতির উপদেষ্টা) আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। এ ছাড়া সমিতির একটি সদস্যপদ দিতে বলেন। আমি বললাম, আপনার তো জুয়েলারি ব্যবসা নেই। তখন তিনি বলেন, প্রয়োজনে সংগঠনের গঠনতন্ত্র সংশোধন করেন।’

এনামুল হক খান আরও বলেন, ‘একদিন রুহুল আমিন রাসেল মোবাইলে কল করে ওয়েস্টিন হোটেলে যেতে বলেন। সেখানে গেলে তিনি তাঁর মোবাইল ফোনে সায়েম সোবহানকে ধরিয়ে দেন। ফোনে সায়েম সোবহান বলেন, “আমি জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি হতে চাই। আপনি কী বলেন?” তখন আমি তাকিয়ে দেখি আশপাশে তাঁর অনেক লোক। ভীতিকর পরিস্থিতিতে আমি তখন তাঁকে বলি, এটা তো সুখবর। এরপর একদিন হঠাৎ করে নির্বাচন কমিশন গঠনের চিঠি পাই। সেখানে আমাকে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। তখন আমি পর্ষদের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা বলেন, যা যা বলে করেন। তারপর নির্বাচনের সব কার্যক্রম তাঁর বাসা থেকে পরিচালিত হয়। হঠাৎ একদিন দেখি, সায়েম সোবহান সমিতির সদস্য।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রুহুল আমিন রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। চ্যালেঞ্জ করছি, অভিযোগের বিষয়ে তাঁরা কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে পারবেন না। যদি দিতে পারেন তাহলে আইনগত যে ব্যবস্থা হবে, তা মেনে নেব।’

বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে উল্লেখ করে দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘বিপণিবিতানের পঞ্চম তলায় আমরা ১২ হাজার টাকা বর্গফুটে দোকান কিনেছিলাম। এখন আমাদের সাততলায় দুই লাখ টাকা বর্গফুটে দোকান কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। গত সোমবার সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে আমি বলেছিলাম, বায়তুল মোকাররমে নিচতলা ও দোতলায় দোকান থাকলে এখানেও পঞ্চম ও সপ্তম তলার জুয়েলারি দোকান থাকতে পারে। তার পর থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপ আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমি ইতিমধ্যে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।’