নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সিন্ডিকেট নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি বাণিজ্যমন্ত্রীকে ‘ধরবেন’। এ প্রসঙ্গে আজ বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি বলিনি। তিনি কী বুঝে কোন পরিস্থিতিতে এ কথা বলেছেন, তা আমি বলতে পারব না।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর গতকাল তাঁর সঙ্গে দুই ঘণ্টা ছিলাম, কিন্তু এ প্রসঙ্গে কথা হয়নি।’
আজ বাংলাদেশে সফররত ইউএস বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এসব কথা বলেন।
সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিন্ডিকেটের অর্থ অনেক বড়। ডিমের কথাই ধরা যাক, একজন-দুজন তো নয়, হাজার হাজার মানুষ দেশব্যাপী ডিমের ব্যবসা করছে। সুযোগ যে তারা নেয় না, সেটা নয়। সরকারও দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করে।’
বাজারে সিন্ডিকেটের প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, ‘জেলজুলুমের মাধ্যমে নয়, আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চাই। ব্যবসায়ীদের হঠাৎ জেলজুলুম হলে তারা সব বন্ধ করে দিতে পারে, তখন মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে। ডিমের দাম বেড়ে গেলে বলেছিলাম, দরকার হলে সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য আমদানি করা হবে।’
বাজারে যখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, তখন ভোক্তা অধিকারের মাধ্যমে চেষ্টা করা হয় যেন জিনিসপত্র ন্যায্য দামে বিক্রি হয়। তবে কখনো কখনো প্রয়োজনীয় লোকবল থাকে না। সে কারণে শতভাগ মনিটরিং সম্ভব হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
কিন্তু কোনোভাবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমছে না, শ্রীলঙ্কাও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে বাংলাদেশ কেন পারছে না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা ও আমাদের পরিস্থিতি ভিন্ন। তাদের অর্থনীতির বড় খাত হচ্ছে পর্যটন, সেটা তারা পুনরুজ্জীবিত করতে পেরেছে। আমাদের দেশ বড়, সমস্যাও অনেক, তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে কৃচ্ছ্রসাধন করা উচিত।’
ডিমের দাম কেমন হওয়া উচিত, তা বলে দিয়েছে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, ডিম যেন বাজারে সে দামেই বিক্রি হয়।
মূল্যস্ফীতি সারা পৃথিবীতেই বেশি। যুক্তরাজ্যের দোকানে কয়টা টমেটো কেনা যাবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়েছে। মুহূর্তের মধ্যে তার সমাধান হবে—এমন তো সম্ভব নয় বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে তুলনা চলে না। ভারতে চিনির দাম কম। নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও তাদের হাতে বাড়তি চিনি থাকে, সেটা তারা রপ্তানি করে। বাংলাদেশে ৯৯ শতাংশ চিনি আমদানি করতে হয়। তবে দুই দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে মিল আছে।