ভারতীয় মুদ্রা রুপি সবর্কালের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। ডলারের বিপরীতে রুপি সোমবার দর হারাতে শুরু করলে শেষ পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া আর্থিক বাজারে হস্তক্ষেপ করে, যাতে রুপি আরও বেশি খারাপ পরিস্থিতিতে না চলে যায়। আঞ্চলিক দেশগুলোর মুদ্রাগুলো দুর্বল হয়ে পড়া ও ভারত থেকে বিনিয়োগ চলে যাওয়ার কারণে যে চাপ তৈরি হয়েছে, তার ফলেই রুপির এই দুর্দশা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দিন শেষ প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছে ৮৪ দশমিক ৩৯২৫ রুপি। গত সপ্তাহে রুপি আরও একবার সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গিয়েছিল। তখর ডলারের দাম দাঁড়িয়েছিল ৮৪ দশমিক ৩৮৭৩ রুপি। সোমবার রুপি শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ দর হারিয়েছে।
বিদেশি একটি ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তেল কোম্পানি ও বিদেশি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে রুপি চাপে রয়েছে। বিদেশি ব্যাংকগুলো সম্ভবত তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে ডলারের বেশি চাহিদা পাচ্ছে। অর্থাৎ ডলারের চাহিদা বেশি থাকার কারণেই রুপি ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও ভারত থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করছে। নভেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে নিট ২৫০ কোটি ডলার বিদেশে নিয়ে গেছে। গত মাসে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ভারত থেকে প্রত্যাহার হয়েছিল।
শেয়ারবাজারের মূল সূচক, বিএসই সেনসেক্স এবং নিফটি ৫০ সোমবার প্রায় অপরিবর্তিত ছিল।
ডলার সূচক বাড়ার কারণে এশিয়ার অন্যান্য দেশের মুদ্রাও দর হারিয়েছে। এই পতন ছিল শূন্য দশমিক ১ শতাংশ থেকে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার পর ডলার সূচক চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠেছে।
ভারতীয় রুপির মতোই যে মুদ্রার দিকে ঘনিষ্ঠ নজর রাখা হয়, সেটি চীনের ইউয়ান। বিদেশের বাজারে এই মুদ্রার দাম শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। ফলে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৭ দশমিক ২১ ইউয়ান পাওয়া গেছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চীন গত শুক্রবার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তবে তা বিনিয়োগকারীদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। তাদের প্রত্যাশা ছিল, আরও বড় প্রণোদনা দেওয়া হবে।
বিশ্লেষকেরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের নীতিমালা মার্কিন মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দেবে। পাশাপাশি বন্ড থেকেও বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে। সেটা ঘটলে, সুদের হার কমানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ এখন যে পরিকল্পনা করছে, তা চালিয়ে নেওয়া তাদের জন্য কঠিন হবে।
আইএনজি ব্যাংক একটি নোটে বলেছে, বছরের শেষ নাগাদ ডলার আরও শক্তিশালী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্যাংকটির ধারণা, ডলার সূচক বছর শেষে এখনকার চেয়ে বাড়বে।