গ্রাম ও শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ১২ শতাংশের বেশি
গ্রাম ও শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখন ১২ শতাংশের বেশি

খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার ১২ শতাংশ ছাড়াল

দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। সদ্য সমাপ্ত অক্টোবর মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আজ বুধবার মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এই চিত্র প্রকাশ করেছে।

আগের মাস সেপ্টেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত জুলাই মাসে অবশ্য খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছিল, যা গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গত কয়েক মাস ধরেই দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে। এটি বিশেষ করে গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষকে বেশি ভোগাচ্ছে।

বিবিএসের হিসাব অনুসারে, অক্টোবর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। সেটিও আবারও ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশে উঠেছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে নেমেছিল। তার আগের মাস আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। তারও আগে জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।

তবে অক্টোবর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়লেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কমেছে। এই মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।

গত অক্টোবর মাসে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি বেশ আলোচনায় ছিল। একপর্যায়ে ডিমের ডজন ১৭০-১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। শাকসবজির দামও বেশ চড়া ছিল। তখন বিশেষ করে পেঁয়াজের দামও বেশ বৃদ্ধি পায়। চালের দামও ছিল বাড়তি।

দেড় বছর ধরে দেশে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ডিম, মুরগি, গরুর মাংস, শাকসবজি, মসলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশি চাপে পড়েছেন। বর্তমানে চালের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে ডিমের ডজন ১৭৫ টাকায় উঠে যাওয়া নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। আবার শীতের সবজিও বাজারে তেমন একটা নেই, যা আছে তার দাম আকাশচুম্বী।

উচ্চ মূল্যস্ফীতি এখন দেশের অর্থনীতিতে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। প্রায় দেড় বছর ধরেই মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে আছে। মূল্যস্ফীতি একধরনের করের মতো, যা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়।

আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে গেলে গরিব ও মধ্যবিত্তের সংসার চালাতে ভোগান্তি বাড়ে। এমনিতেই বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। তার সঙ্গে চিকিৎসা, পরিবহনসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির এ চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ।

কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সংকলিত মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন অর্থনীতিবিদেরা। তবে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর সেই চিত্র পাল্টে যায়। যে কারণে হঠাৎ করে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়। নতুন সরকারের নীতিনির্ধারকেরাও দাবি করেন, বিবিএস এখন সঠিক পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে।