প্রতীকী ছবি
প্রতীকী  ছবি

ক্রয় কমিটির বৈঠক

সুইজারল্যান্ড থেকে এলএনজি ও ভারত থেকে ডিজেল আমদানি হচ্ছে

সুইজারল্যান্ড থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হবে। এক কার্গো হচ্ছে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মিলিয়ন মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিটের (এমএমবিটিইউ) সমান। আর ভারত থেকে আনা হবে ৩০ হাজার টন ডিজেল। এই এলএনজি ও ডিজেল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৮৫৭ কোটি টাকা।

সচিবালয়ে আজ বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এ দুটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সচিব জানান, এলএনজি সরবরাহের কাজ পেয়েছে সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম পড়বে ১২ দশমিক ৫৮ মার্কিন ডলার। এর আগে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম ছিল ১৩ দশমিক ৫৫ ডলার। এলএনজি আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ৫৮৩ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এ নিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছর শুরুর ১১ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এর আগে অর্থবছর শুরুর তৃতীয় দিনে ৩ জুলাই প্রথম প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়।

সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড থেকে ৩০ হাজার টন ডিজেল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২৭৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার জন্য ২৩টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের চুক্তি আছে। পেট্রোবাংলা এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দর প্রস্তাব আহ্বান করলে চারটি দর প্রস্তাব দাখিল করে। তার মধ্যে তিনটি প্রস্তাব কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।

দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটির সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা হয় সুইজারল্যান্ডের টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ভিটল এশিয়া প্রাইভেট ১৩ দশমিক ৪৮ মার্কিন ডলার এবং গানভোর সিঙ্গাপুর লিমিটেড ১৫ দশমিক ১৫ মার্কিন ডলার দর উল্লেখ করে।

অন্য একটি প্রস্তাবে ছয় মাসের জন্য জ্বালানি তেল আমদানির প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এতে ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ৮৬ হাজার ৬৮০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬ হাজার ৪৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বিভিন্ন দেশের আটটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে এ তেল আমদানি হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার এএসপি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ইএনওসি, মালয়েশিয়ার আইওসিএল, চীনের পেট্রোচায়না, মালয়েশিয়ার পিএলসিএল, থাইল্যান্ডের পিটিটিটি, ওমানের ওকিউটি ও চীনের ইউএনআইপিইসি। ক্রয় কমিটিতে আসার আগে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে তা অনুমোদিত হয়েছিল ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর।

সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি থেকে জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ের জন্য এ ৩০ হাজার টন ডিজেল আমদানি হবে। ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে এ ডিজেল সে দেশের শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে সরাসরি বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপোতে আসবে। প্রতি ব্যারেলের প্রিমিয়াম দাম ৫ দশমিক ৫ মার্কিন ডলার।

এদিকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে ৮০ হাজার টন এমওপি সার কেনার প্রস্তাবও আজ বৃহস্পতিবার ক্রয় কমিটিতে অনুমোদিত হয়। কানাডার কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে পৃথক দুটি লটে ২৬০ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সার কেনা হবে। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ২৭৫ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।

বৈঠকে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় একটি ১০ তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের পূর্ত কাজের প্রস্তাব উপস্থাপিত হলেও এর বিভিন্ন ব্যয় বাজারমূল্য অনুযায়ী নির্ধারণের কথা বলে ক্রয় কমিটি তা ফেরত পাঠিয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৮ কোটি টাকার বেশি।