এবার উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ চুরি করেছে হ্যাকাররা

হ্যাকাররা উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ৬ হাজার ২০০ কোটি উগান্ডান শিলিং চুরি করেছে। বিদেশে অবস্থানকারী হ্যাকাররা এই অর্থ চুরি করেছে বলে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র নিউ ভিশন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, চলতি মাসের আরও আগের দিকে এই ঘটনা ঘটেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, হ্যাকাররা নিজেদের ‘ওয়েস্ট’ নামে চিহ্নিত করেছে। তারা ব্যাংক অব উগান্ডার তথ্যপ্রযুক্তি–ব্যবস্থায় ঢুকে অবৈধভাবে অর্থ সরিয়ে নেয়। এই হ্যাকার গোষ্ঠীটি দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়াভিত্তিক বলে সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়। ব্যাংকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে নিউ ভিশন জানায়, চুরি করা অর্থের একটি অংশ জাপানে পাঠানো হয়েছে।

ব্যাংক অব উগান্ডার কাছে এই চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে তারা রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেনি। এ ব্যাপারে উগান্ডার পুলিশও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

নিউ ভিশনের খবরে বলা হয়, চুরি যাওয়া অর্থের অর্ধেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক হ্যাকারদের কাছ থেকে সফলভাবে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে। অর্থ চুরির এই ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট ইউওয়েরি মুসেভেনি এ বিষয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

উগান্ডার সবচেয়ে বেশি প্রচারসংখ্যার স্বাধীন সংবাদপত্র ডেইলি মনিটর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই চুরির ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন।

দেশটিতে ব্যাংক, আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এবং টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান থেকে এর আগেও হ্যাকাররা অর্থ চুরি করেছে। তবে পুলিশ বলছে, কিছু ব্যাংক বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করতে চায় না। কারণ, তাদের আশঙ্কা, এসব ঘটনা স্বীকার করলে গ্রাহকেরা তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।

এর আগে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা হয়েছিল। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ৮১ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হ্যাকাররা চুরি করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসে সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় চুরির ঘটনা, যা আলোড়ন তুলেছিল সারা বিশ্বে। ফলে দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে। তথ্য আদান–প্রদানব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আনে সুইফট।

কিন্তু যে দেশের কষ্টার্জিত আয়ের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি হলো, সেই বাংলাদেশে এর তদন্তই শেষ হয়নি, শাস্তিও পায়নি কেউ। বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিন পরে চুরির তথ্য জানতে পারলেও তৎকালীর গভর্নর আতিউর রহমান তা গোপন রাখেন। বিষয়টি অর্থমন্ত্রীকে বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় ঘটনা ঘটার এক মাসের বেশি সময় পরে।