শেয়ারবাজারে কারসাজি তদন্তে আরও ক্ষমতা চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। পাশাপাশি সংস্থাটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর তথ্য যাচাই–বাছাইয়ে আরও ভূমিকা রাখতে চায়। পুঁজিবাজারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) নিয়মিত আয়োজন ‘সিএমজেএফ টকে’ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ টি এম তারিকুজ্জামান।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার পল্টনে সিএমজেএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ডিএসইর এমডি বলেন, শেয়ার নিয়ে কারসাজি বন্ধ ও কারসাজির ঘটনা তদন্তে ডিএসইর আরও ক্ষমতা দরকার। বিশেষ করে কারখানা পরিদর্শনের ক্ষেত্রে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, ডিএসই কারও কাছে তথ্য চাইলে কেউ তা না–ও দিতে পারেন। এ জন্য বাধ্য করার এখতিয়ার ডিএসইর নেই, যা বিএসইসির আছে। বর্তমানে কোনো কারখানা পরিদর্শনের জন্য বিএসইসির অগ্রিম অনুমতি নিতে হয়। ক্ষমতা বাড়ানো হলে কারসাজি বন্ধে ডিএসইর আরও কাজ করার সুযোগ হবে।
এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেন, আইপিও যাচাই-বাছাইয়ে আগে স্টক এক্সচেঞ্জের ভালো ভূমিকা ছিল, এখন অনেকটাই কম। বর্তমানে আইপিওসহ সব ধরনের গণপ্রস্তাবের অনুমোদন দেয় বিএসইসি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ জন্য আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। কোথাও স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদন দেয়, আবার কোথাও নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ডিএসইর এমডি এ টি এম তারিকুজ্জামান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সিএমজেএফ টকে অংশ নিয়ে তিনি শেয়ারবাজারে কারসাজি বন্ধ, স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথকীকরণ, চীনের কৌশলগত বিনিয়োগ, ভালো কোম্পানি বাজারে আনা, বিনিয়োগকারীর সুরক্ষাসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে আস্থার উন্নয়নে সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা স্টক এক্সচেঞ্জ কখনো শেয়ারের দাম ঠিক করে না। এটা বিশ্বের কোথাও নেই।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি জিয়াউর রহমান, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে ডিএসইর এমডি হিসেবে যোগদানের আগে তারিকুজ্জামান পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ছিলেন।
বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা বিষয়ে তারিকুজ্জামান বলেন, বাজারে লাভ-লোকসান থাকবেই। কারও লোকসান হবে না, এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হন এবং বিনিয়োগকারীর টাকা যাতে কেউ আত্মসাৎ করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা তৎপর।
কারসাজি বন্ধে ডিএসই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে কি না—জানতে চাইলে তারিকুজ্জামান বলেন, কারসাজির ঘটনায় এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, সেগুলোর অনেক তদন্তই ডিএসইর করা। তবে কারসাজি বন্ধে ডিএসইর ক্ষমতা আরও বাড়ানো দরকার।