গ্রামীণ ব্যাংকের লোগো
গ্রামীণ ব্যাংকের লোগো

পাঁচ বছরের জন্য আয়করমুক্ত সুবিধা ফিরে পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক

ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক আয়করমুক্ত সুবিধা ফিরে পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত আয়করমুক্ত সুবিধা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, প্রতিবছর গ্রামীণ ব্যাংককে শুধু আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কর অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছিল। গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৮৩ বাতিল করে সরকার যখন ২০১৩ সালে আইন করে, তখনও বহাল রাখা হয় এ সুবিধা। কিন্তু ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সুবিধাটি হঠাৎ বন্ধ করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, নামে ব্যাংক হলেও গ্রামীণ ব্যাংক বাস্তবে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমও পরিচালনা করে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) থেকে নিবন্ধন নেওয়া সব ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানই আয়করমুক্ত। বিশেষ আইনে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংককে এমআরএ থেকে নিবন্ধন নেওয়ার দরকার নেই। তবে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের বৈশিষ্ট্য এমআরএর প্রতিষ্ঠানগুলোর মতোই। ফলে আয়কর অব্যাহতি পাওয়াটা গ্রামীণ ব্যাংকের ন্যায্য, যা আগে ছিলও।

কর আরোপের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদে তা অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও কর অব্যাহতি সরকার দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

এমআরএর ২০২৩ সালের তথ্যভান্ডার অনুযায়ী, গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য ১ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার জন। এর মধ্যে ৭১ লাখ ৬০ হাজার ঋণগ্রহীতা সদস্য ঋণ নিয়েছেন ২৪ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকটির সদস্যদের ঋণের স্থিতি ১৬ হাজার ১৫০ কোটি টাকা আর সঞ্চয় স্থিতি ২২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা।

এদিকে আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের দান করা অর্থের ওপরও ২০২৯ সাল পর্যন্ত আয়কর দিতে হবে না বলে ভিন্ন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এনবিআর। ২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করা শায়খ আহমাদুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত এ দাতব্য প্রতিষ্ঠান সাম্প্রতিক বন্যায় ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা করে আলোচনায় আসে। ২০২০ সালের করোনা প্রাদুর্ভাবের সময়ও সংগঠনটি দাতব্য কার্যক্রম করে প্রশংসিত হয়। ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে প্রবল বন্যা এবং চলতি বছরের আগস্টের বন্যায় সংগঠনটি ব্যাপক মাত্রায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে।

এ ছাড়া ২০২৩ তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পের সময়ে তুরস্কে শীতবস্ত্র পাঠায় আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। বন্যার্ত ব্যক্তিদের ত্রাণ বিতরণ ও বন্যা–পরবর্তী পুনর্বাসনের জন্য চলতি পঞ্জিকা বছরে ১০০ কোটি টাকার সহায়তার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে এ ফাউন্ডেশন।