অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পর এবার ট্যাংকার থেকে সাগরের তলদেশে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল খালাস শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ২টা ৪৮ মিনিটে ‘এমটি জাগ অপর্ণা’ থেকে পাম্পিং করে পরীক্ষামূলকভাবে এই তেল খালাস শুরু হয়।
ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. লোকমান প্রথম আলোকে বলেন, ট্যাংকারটি থেকে ৬০ হাজার টন ডিজেল পাইপলাইনে খালাস করে প্রথমে মহেশখালীতে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে নেওয়া হবে। এই পরিমাণ তেল খালাস করতে ২৮ ঘণ্টা লাগবে। তবে এখন যেহেতু পরীক্ষামূলকভাবে সবকিছু যাচাই করা হচ্ছে, সে জন্য সময় কম–বেশি হতে পারে।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর আরেকটি পাইপ দিয়ে প্রায় ৮২ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাস করা হয়। এ নিয়ে দেশে দুটি পাইপলাইন দিয়ে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হলো।
ইস্টার্ন রিফাইনারির এমডি মো. লোকমান বলেন, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনাল থেকে দুটি পাইপলাইনের একটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও আরেকটিতে পাম্পিং করে পরিশোধিত তেল (ডিজেল) নেওয়া হবে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। পরীক্ষামূলকভাবে তেল খালাস সফল হলে পাইপলাইনে নিয়মিত তেল খালাস করা হবে বলে জানান তিনি।
বঙ্গোপসাগরে বড় জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাসের এই প্রকল্পের নাম ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপলাইন’। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে (জিটুজি) চুক্তির ভিত্তিতে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি। মূলত দ্রুত সময়ে কম খরচে তেল খালাস করতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে ইস্টার্ন রিফাইনারির কর্মকর্তারা জানান।
এ প্রকল্পের আওতায় সাগরে ভাসমান মুরিং বসানো হয়েছে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে মহেশখালী স্টোরেজ ট্যাংক হয়ে আবার পতেঙ্গার ইস্টার্ন রিফাইনারি পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়। সংশোধনের পর এ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।
এর আগে গত জুলাইয়ে প্রথমবারের মতো সাগরের তলদেশে পাইপলাইনে তেল খালাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তখন জাহাজের ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পারায় তেল খালাসের সংযোগকারী ভাসমান পাইপ ছিঁড়ে যায়। প্রথমবার ব্যর্থ হওয়ার পর চীন থেকে চারটি টাগবোট আনা হয়। দেশীয় একটি টাগবোটও রাখা হয়। সব মিলিয়ে সাগরে জাহাজের ভারসাম্য ঠিক রেখে তেল খালাস করা হচ্ছে।