ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুরে মৌসুমি চারার হাট জমে উঠেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ হাটে বিভিন্ন জাতের ধানের চারা কেনাবেচা হয়। প্রতিদিন পাঁচ-ছয় লাখ টাকার লেনদেন হয়। লাভও ভালো হচ্ছে। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ই খুশি।
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে নন্দনপুর বাজারে প্রতিবছর ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে ধানের চারা কেনাবেচা হয়। এ বাজারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কৃষকেরা যেমন চারা নিয়ে আসেন, তেমনি ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের কাছ থেকে বীজতলা কিনে চারা বিক্রি করতে আসেন। ধানের জাতভেদে প্রতি আঁটি ছোট চারা ৭০ থেকে ১৪০ টাকায় এবং বড় চারা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলো থেকেও কৃষক এবং পাইকারেরা এ হাটে ধানের চারা কিনতে আসেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে এ জেলায় ২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীজতলা হয়েছে ২ হাজার ৮২২ হেক্টর জমিতে। আর এ জেলায় এবার ৫১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ করে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪৬ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৫১৫ হেক্টর বা লক্ষ্যমাত্রার ৬৯ ভাগ জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত সাহা প্রথম আলোকে বলেন, নন্দনপুর বাজারে প্রতিবছর এ মৌসুমি হাট বসে। আমাদের প্রশিক্ষিত কৃষকেরা বীজতলা তৈরি করে থাকেন। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি জমিতে বীজতলা হয়েছে। যেসব কৃষক বীজতলা করতে পারেন না, তাঁরা এ হাট থেকে চারা কিনে নেন। এ ছাড়া হবিগঞ্জ ও ভৈরব জেলার কৃষকেরাও এখানে চারা কিনতে আসেন। আবার অনেকেই এখান থেকে চারা কিনে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করেন। সব মিলিয়ে জেলার কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ই লাভবান হচ্ছেন।
চারার হাটে সদর উপজেলার উত্তর সুহিলপুর গ্রামের দুলাল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন কানি (১ কানিতে ৩০ শতাংশ) জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ করতে বীজতলা তৈরি করেছি। পাঁচজন মিলে আমরা ব্যবসা করছি। তাই অন্যদের কাছ থেকেও বীজতলা কিনেছি। স্বল্প বিনিয়োগ করে ভালো লাভ পাচ্ছি।’