গাবতলী থেকে সদরঘাট হয়ে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে ঋণ দিতে আগ্রহী চীনের এক্সিম ব্যাংক। এই প্রকল্পে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এতে চীনের এক্সিম ব্যাংক প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা দেবে। এটি মেট্রোরেল-২ নামে পরিচিত।
বাংলাদেশ সফররত চীনের এক্সিম ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বুধবার সকালে বৈঠক করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ইআরডির সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মিরানা মাহরুখ নেতৃত্ব দেন।
সভায় চীনের এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে কি ধরনের প্রকল্প নিতে আগ্রহ বাংলাদেশ, তা জানানো হয়। সভায় ৯টি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। মেট্রোরেল ছাড়াও ভাঙা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের প্রকল্পেও চীনের আগ্রহী বেশি। জানা গেছে, এই প্রকল্পে ৪১ হাজার কোটি খরচ হবে।
এ ছাড়া পিরোজপুরে কচা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ এবং মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু মেরামতে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে অর্থ পেতে চায় বাংলাদেশ। চীনা ঋণ পেতে রেলের আরও যেসব প্রকল্পের তালিকা করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে জামালপুর পর্যন্ত মিশ্র গেজ রেলপথ নির্মাণ, পাবনার ঢালারচর থেকে ফরিদপুরের পাচুরিয়া পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ, রাজবাড়ীতে একটি রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণ এবং ভৈরববাজার থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত মিটারগেজ লাইন মিশ্র গেজে রূপান্তর। গতকালের বৈঠকে এসব প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে চীনের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ চীনা মুদ্রায় পাওয়া নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই ধরনের বাণিজ্য সহায়তা কিংবা বাজেট সহায়তা অন্য দেশ বা সংস্থা থেকে নিলে সুদের হার কত, গ্রেস পিরিয়ডসহ মেয়াদ কত বছর, এসব তথ্য জানানো হয়।
ইআরডির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, চীনের মুদ্রা ইউয়ানে ঋণ নিয়ে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের আদলে একটি তহবিল গঠন করা হতে পারে। সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের চীন থেকে আমদানির বিপরীতে ইউয়ানে অর্থ পরিশোধ করা হবে।
ইআরডির একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ থেকে ১১ জুলাই চীন সফর করতে পারেন। ওই সফরে রেল ও সড়ক যোগাযোগের প্রকল্পগুলোয় চীনা ঋণের বিষয়টির ঘোষণা আসতে পারে।
গত এক বছরে চীন বাংলাদেশকে নতুন কোনো প্রকল্পে ঋণ দেয়নি। সর্বশেষ, ২০২৩ সালের মে মাসে রাজশাহী ওয়াসার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে চীনা ঋণ পাওয়া গিয়েছিল। চীনা ঋণের শর্ত হলো চীন থেকে ঋণ নিয়ে প্রকল্প করলে চীনা ঠিকাদারকে কাজ দিতে হয়। কোনো দরপত্রের মাধ্যমে নয়; চীনা কর্তৃপক্ষই ঠিক করে দেয় ঠিকাদার।