বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। মোট ২১ বার দেওয়া হলেও অর্থ সাদা হয়েছে সামান্যই।
যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়া কর মওকুফ সুবিধার ঘোষণা দেওয়া অনুচিত।
কোনোভাবেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আসা অর্থকে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া যাবে না।
গড়ে বাংলাদেশের কালোটাকা ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ হলে, টাকার অঙ্কে তা ১০ লাখ ৫ হাজার ৯৯৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ২১ বার কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে। ৫০ বছরের মধ্যে অন্তত ৪০ বছরই কোনো না কোনোভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ছিল।
বিশ্বে ৫০টির বেশি দেশ কালোটাকা সাদা বা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে। বেশির ভাগ দেশ এই সুযোগ দিয়েছে অল্প কয়েকবার এবং কম সময়ের জন্য। যেসব দেশ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে, মূলত তারাই বেশি সাফল্য পেয়েছে। যদিও পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে খুব বেশি সাফল্যের উদাহরণ নেই।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ২১ বার কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে। ৫০ বছরের মধ্যে অন্তত ৪০ বছরই কোনো না কোনোভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ ছিল। অসংখ্যবার দেওয়া হলেও যাঁরা সুযোগ নিয়ে কালোটাকা সাদা করেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে কখনোই ব্যবস্থা নেয়নি কোনো সরকার। এসব কারণে দেশে কালোটাকা সাদা হয়েছে সামান্যই।
কালোটাকা বা প্রদর্শিত অর্থ সাদা করা নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি লিখিত ম্যানুয়াল আছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এটি প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এই কর্মসূচিকে স্বেচ্ছায় ঘোষণা বা ভলান্টারি ডিসক্লোজার প্রোগ্রাম (ভিডিপি) বলা হয়। আবার অনেকে কর মওকুফ বা ট্যাক্স অ্যামনেস্টি বলেন। শুরুতে এই কর্মসূচির আওতায় দেশের মধ্যে থাকা অপ্রদর্শিত বা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হতো। এখন পাচার করা অর্থ বৈধ করার সুযোগও দিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। আইএমএফ অপ্রদর্শিত কথাটাই ব্যবহার করে। কেননা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আসা অর্থ সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিরোধী তারা।
ম্যানুয়ালে কী করা যাবে না, তা নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে আইএমএফ। শুরুতেই বলা আছে, অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ কোনোক্রমেই বারবার দেওয়া যাবে না, বরং নির্ধারিত সময় শেষ হলেই যাঁরা সুযোগ নেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে। আবার সাদা করার সুযোগ দিতে হবে সীমিত সময়ের জন্য, যাতে সামনে আরও সুযোগ আসবে এই আশায় কালোটাকার মালিকেরা তাঁদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে না পারেন।
অপ্রদর্শিত অর্থের স্বেচ্ছা ঘোষণা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করছে ৩৮টি দেশের সংস্থা অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)। ভিডিপি নিয়ে তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদন ২০১৫ সালের। ‘ভলান্টারি ডিসক্লোজার প্রোগ্রামস: এ প্যাথওয়ে টু ট্যাক্স কমপ্লায়েন্স’ শিরোনামের এক হালনাগাদ প্রতিবেদনে ওইসিডি বলেছে, এ জাতীয় কর্মসূচি বারবার দেওয়া যাবে না, কম সময়ের মধ্য দিয়েই কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে। ওইসিডি ২০১৫ সালে জরিপ করে বলেছিল, তখন পর্যন্ত বিশ্বের ৪৭টি দেশ কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে।
আইএমএফ তাদের প্রতিবেদনে অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ দিয়েছে এমন ২০টি দেশের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে নেদারল্যান্ডসই সর্বোচ্চ পাঁচবার এই সুবিধা দিয়েছে। অন্যরা দিয়েছে এক থেকে সর্বোচ্চ তিনবার।
অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার ক্ষেত্রে অন্যতম সফল দেশ হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার কথা বলা হয়। ইন্দোনেশিয়ার পাদজাদজারান ইউনিভার্সিটির পলিটিক্যাল অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স বিভাগের চার শিক্ষকের একটি যৌথ গবেষণা প্রকাশিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ইকোনমিক অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইস্যু-২০১৭’ সংখ্যায়। সেখানে এশিয়ার নয়টি দেশের অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগের একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ ছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এশিয়ার নয়টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ, ১৮ বার। এর পরেই আছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা, ১১ বার। ফিলিপাইন দিয়েছে ১০ বার এবং ইন্দোনেশিয়া ৪ বার। ভারত ১১ বার এই সুযোগ দিলেও এর পাঁচবারই দেওয়া হয়েছে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে, সত্তর ও আশির দশকে দেওয়া হয় আরও তিনবার। কোনোবারেই সাফল্য পায়নি ভারত।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, দেশে স্বাধীনতার পর থেকে ঘোষণা দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ২১ বার। এই সুযোগ গ্রহণ না করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি ছিল মাত্র দুবার। প্রথমবার ১৯৭৬ সালে, সামরিক শাসনের সময়ে। পরের বার ২০০৭ সালে, সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়। দুবার হুমকি দেওয়া হলেও ২০০৭ সালেই কেবল উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থ সাদা হয়েছিল। তবে সুযোগ না নেওয়ায় কখনোই কালোটাকার মালিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়নি কোনো সরকার, বরং নতুন করে আবার সুযোগ দিয়েছে। ফলে সবচেয়ে বেশি সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও কার্যত এটি বাংলাদেশের জন্য ব্যর্থ কর্মসূচি হিসেবেই রয়ে গেছে। ৫০ বছরে কালোটাকা সাদা হয়েছে সামান্যই।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর বাজেট ঘোষণার আগেই কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়। প্রথমে সুযোগটি মাত্র দুই মাসের জন্য রাখা হয়, পরে আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। বলা হয়েছিল, সুযোগটি নেওয়া না হলে ২৫০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা হবে। সে সময় মানুষ মূলত ভয়েই সুযোগটি বেশি নেন। সে সময় জানানো হয়েছিল, ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা বৈধ করেছিল, আর সরকার রাজস্ব পায় ৬৮৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। তবে ২০১৭ সালের ৮ জুন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানিয়েছিলেন, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সব মিলিয়ে বৈধ হয়েছিল ৯ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা এবং এতে সরকার রাজস্ব পায় ৯১১ কোটি টাকা।
আরেকটি ব্যতিক্রমী সময় ছিল ২০২০-২১ অর্থবছর, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অর্থ বৈধ হয় এ সময়ে। এর পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সে সময় বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বই ছিল কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত। বিশ্ব ছিল কঠোর লাকডাউনে। সব ধরনের চলাচল ছিল বন্ধ। অর্থের চাহিদাও ছিল কম। অর্থ বাইরে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। ছিল না হুন্ডির চাহিদা। ফলে সব ধরনের অবৈধ অর্থ দেশেই থেকে গেছে, যার একটি অংশ বৈধ করা হয়। কোভিডের ওই এক অর্থবছরে দেশে একদিকে যেমন রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছিল, তেমনি সাদা হয় রেকর্ড পরিমাণ কালোটাকা।
জাতীয় সংসদে সাবেক অর্থমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য এবং এনবিআর থেকে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত কালোটাকা সাদা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫২২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর এ থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৬৪১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। তবে সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ও কোভিডের এক অর্থবছর বাদ দিলে সাদা হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার ২৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, এতে সরকার রাজস্ব পেয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৬৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
অস্ট্রিয়ার অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ফ্রেডারিক স্নাইডার প্রায় ৪০ বছর ধরে কালোটাকা নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর করা সমীক্ষার সঙ্গে যুক্ত আছে বিশ্বব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এবং আইএমএফ। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘শেডিং লাইট অন দ্য শ্যাডো ইকোনমি: আ গ্লোবাল ডেটাবেইস অ্যান্ড দ্য ইন্টারঅ্যাকশন উইথ দ্য অফিশিয়াল ওয়ান’ শীর্ষক তাঁর সর্বশেষ সমীক্ষায় ১৫৭টি দেশের ১৯৯১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কালোটাকার তথ্য দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২৭ বছরে কালোটাকার গড় হার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের জিডিপির পরিমাণ ছিল স্থির মূল্যে ৩০ লাখ ৩৯ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। গড় কালোটাকা ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ হলে, টাকার অঙ্কে তা ১০ লাখ ৫ হাজার ৯৯৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, দেশের কালোটাকার পরিমাণ দেড় বছরের বেশি বাজেটের সমান। আর সে তুলনায় সাদা হয়েছে অতি সামান্য অর্থ।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে দেশে প্রথমবারের মতো পাচার করা অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। আইএমএফের ‘ভলান্টারি ডিসক্লোজার প্রোগ্রাম-ডিজাইন, প্রিন্সিপলস, অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন কনসিডারেশনস’ শীর্ষক ‘টেকনিক্যাল নোটস অ্যান্ড ম্যানুয়ালস’ অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়া ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে অপ্রদর্শিত সম্পদ ঘোষণা দিয়ে বৈধ করার সুযোগ দিয়েছিল। এতে বৈধ হওয়া সম্পদের মূল্যমান ছিল ৩৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের সমান, যা দেশটির জিডিপির ৪০ শতাংশ। তবে পাচার হওয়া তেমন কোনো সম্পদ ফেরত আসেনি। উল্লেখ্য, দেশটি চলতি বছরে আবারও অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে।
গ্রিস ২০১৬ সালে একই ধরনের সুযোগ দিয়ে সফল হয়েছিল। আইএমএফ বলছে, গ্রিসের সাফল্যের কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন তারা দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার চালিয়ে বলেছিল, এটাই অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার শেষ সুযোগ। সুযোগ না নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়, রাজস্ব প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এই প্রচারণা চালায়।
কেবল প্রচারণাই নয়, এই হুমকি যে বিশ্বাসযোগ্য, তারও প্রমাণ দিয়েছিল গ্রিস। দেশটি কর ফাঁকির বিরুদ্ধে ব্যাপকভিত্তিক অভিযান চালায়। সুযোগ ঘোষণার আগে তারা পুরো কর প্রশাসনকে শক্তিশালী করে। অন্য মাধ্যম (থার্ড পার্টি) থেকে তথ্য পেতে আন্তর্জাতিক কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হয়। করদাতাদের কর বিবরণী নিরীক্ষা করে নোটিশ দেওয়া হয়। ব্যাংকের হিসাবের সঙ্গে আয়কর বিবরণীতে দেওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখা হয়। মোট কথা, সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই মাঠে নেমেছিল গ্রিস।
আইএমএফ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়া কর মওকুফ সুবিধার ঘোষণা দেওয়া অনুচিত। কোনোভাবেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে আসা অর্থকে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া যাবে না, অবশ্যই অর্থের উৎস জানার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এ জন্য কর কর্মকর্তাদের তদন্ত করার ক্ষমতা থাকতে হবে। জোরালো করতে হবে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন।
সবশেষে আইএমএফ বলছে, কারা কর ফাঁকি দেয়, কারা অন্য অর্থ পাচার করেছে, সেই তথ্য জানার ব্যবস্থা থাকাটা জরুরি। এ ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় তথ্য বিনিময় বা অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন (এইওআই) নামে পারস্পরিক তথ্য আদান–প্রদানের ব্যবস্থায় যুক্ত থাকার কথা বলেছে আইএমএফ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ওইসিডি এই কাঠামো তৈরি করেছে, যেখানে বাংলাদেশ ছাড়া ১২১টি দেশ যুক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে করেছে বিশেষ আইন। এর মাধ্যমে তারা তথ্য দিতে বিভিন্ন ব্যাংককে বাধ্য করছে।
আইএমএফ মনে করে, পাচার করা টাকা ফেরত আনতে হলে একাধিক দেশের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন। বিশেষ করে যে দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে, সেই দেশ থেকে তথ্য আনতে হবে, তাদের সহযোগিতাও লাগবে। কালো বা অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার কর্মসূচি সফল করার ক্ষেত্রে এটাই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত।
সুতরাং বলা যায়, এ ধরনের কোনো প্রস্তুতি ও পূর্বশর্ত ছাড়াই বছরের পর বছর সুযোগ দেয় বলেই বাংলাদেশে কালোটাকা খুব বেশি সাদা হয় না।