বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে অর্জিত ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপির সাময়িক প্রবৃদ্ধির হার রাজনৈতিক এবং একে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে। সিপিডির এই মন্তব্য নিয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিপিডির মতো সংস্থা সব দেশেই আছে এবং জীবনভরই তারা এ রকম মন্তব্য করে। আমার প্রশ্ন, কিসের ভিত্তিতে সংস্থাটি এমন মন্তব্য করল?’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘হিসাব তো আমাদের কাছেই আছে। রপ্তানি, প্রবাসী আয়, কৃষি, শিল্প, সেবা—সব খাতের হিসাবই আছে। সিপিডির মতো সংস্থার কাছ থেকে মন্তব্য আসুক, ভালো কথা। কিন্তু বিভ্রান্তি ছড়ানো কেন? এতে কী লাভ?’
বিদায়ী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ
সাময়িক হিসাবে তা হয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ
সিপিডি তো বলল বিবিএসের দেওয়া তথ্যই বরং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘কৃষি খাতে করোনার কোনো প্রভাবই পড়েনি। কারণ, এ দেশের মানুষ উন্নয়নের হাতিয়ার। মানুষ কষ্ট করছে অনেক। জীবন বাজি রেখে কাজ করছে তারা। এ দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার তো বাড়বেই। আমি বলব, প্রবৃদ্ধির হার অর্জনে দক্ষিণ এশিয়ায় সবার ওপরে থাকবে বাংলাদেশ। বিদায়ী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। সাময়িক হিসাবে তা হয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। এমন তো নয় যে ৮ দশমিক ২ শতাংশই অর্জিত হয়ে গেছে বলে আমরা বলে দিলাম।’
সিপিডি বলেছে, করোনার মধ্যেও ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ কীভাবে গতবারের তুলনায় বেশি হলো? এটা তো নীতিনির্ধারকদের ভুল বার্তা দিচ্ছে—এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সব
তো তথ্য-উপাত্তের বিষয়। কয়েক দিন পরই জানা যাবে কেমন করে হলো। বললেই তো হয়ে যাবে না। প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)—সবাই তো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘পাঁচ বছর যা যা বলেছি, সব ফলেছে। কেউ চাইলে মিলিয়ে দেখতে পারেন। আর নগদ সহায়তা দেওয়ার একটি সিদ্ধান্তের কারণে প্রবাসী আয়ে প্রতি মাসেই রেকর্ড হচ্ছে। নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে চলেছি। এদিকে আছে
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উচ্চতা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার সময় রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এখন তা ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। আমি নিশ্চিত, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ তা ৩ হাজার ৯০০ ডলার হবে।’
কিন্তু বিবিএসের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রবৃদ্ধির হার ঘোষণা করা হচ্ছে বলে সিপিডির বক্তব্যের বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেক ধরনের মন্তব্য করবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা যার যার হিসাব। জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তুললেও সিপিডির কোনো ভালো কাজ নেই, এমনও নয়।