নিজের একটি ফ্ল্যাট বা বাড়ি প্রায় প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন। সারা জীবনের কষ্টের টাকায় একটি ফ্ল্যাট কিনতে প্রতিদিন খোঁজখবর নেন অনেকে। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্রেতা ধরতে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেয়। সেই সূত্র ধরে খোঁজ নিতে গেলে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আদর–যত্নের কমতি থাকে না। তারপরও মনের ভেতরে সন্দেহ থাকে, বুকিং দেব, টাকাও দেব, কিন্তু সময়মতো ফ্ল্যাট কি বুঝে পাব? তবে একটু সচেতন হলেই আপনার এসব দুশ্চিন্তা কমতে পারে। যে প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্লট-ফ্ল্যাট কিনবেন, সবার আগে তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। তাতে প্রতারণার ঝুঁকি কমে আসবে।
ফ্ল্যাট-প্লট কিনতে হলে আপনি কত টাকা বিনিয়োগ করবেন, প্রথমে তার একটি হিসাব করে ফেলুন। তারপর পছন্দমতো ফ্ল্যাট-প্লট খুঁজুন। সে ক্ষেত্রে রিহ্যাবের আবাসন মেলা সুবিধাজনক জায়গা। কারণ, একসঙ্গে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান মেলায় তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করে থাকে। সেখান থেকে জুতসই ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজে সরেজমিনে ঘুরে দেখে আসুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন।
আবাসন প্রতিষ্ঠানটি বৈধ কি না, তা যাচাই করতে হবে। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা এড়াতে কেনা বা বুকিং দেওয়ার আগে ক্রেতাদের দেখতে হবে, কোম্পানিগুলোর বৈধ অনুমোদনপত্রের নকশা আছে কি না। সতর্ক থাকতে হবে, প্লট প্রকল্পটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে পড়েছে কি না। আবার যে এলাকায় প্রকল্পটি, সেখানে আদৌ তাদের জমি আছে কি না। প্রয়োজনে ক্রেতারা প্রকল্প এলাকায় গিয়েও খোঁজ নিতে পারেন।
ফ্ল্যাট কেনার সময় দেখতে হবে, ভবনের নকশা রাজউক অনুমোদিত কি না। অনুমোদন নেওয়া থাকলে নকশা অনুযায়ী ভবন তৈরি হচ্ছে কি না। কেননা, নকশা অনুযায়ী ভবন তৈরি না হলে রাজউক সেই ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে দিতে পারে। মনে রাখতে হবে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও প্রকল্পের অনুমোদন দিয়ে থাকে।
ফ্ল্যাট-প্লট কিনতে ক্রেতার অবশ্যই কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকতে হবে। টিআইএন ছাড়া ফ্ল্যাট-জমি নিবন্ধন করা যাবে না। আর সেই টিআইএনের বিপরীতে নিয়মিত বার্ষিক কর বিবরণী জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ফ্ল্যাট ও প্লট কেনার সময় নিবন্ধন মাশুল ও কর দিতে হয়। বিভিন্ন ধরনের মাশুল বা কর হার হলো গেইন ট্যাক্স ৪ শতাংশ, স্ট্যাম্প মাশুল ৩ শতাংশ, নিবন্ধন মাশুল ২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ ও মূসক ৩ শতাংশ।