শ্রমিকেরা টেকনিক্যাল মোড় থেকে সরে গেছেন

ন্যূনতম বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে মিরপুরের বেশ কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করছেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
ন্যূনতম বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে মিরপুরের বেশ কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করছেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ন্যূনতম বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে মিরপুরের বেশ কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করছেন। তাঁরা আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সরকারি বাঙলা কলেজের সামনের সড়ক থেকে শুরু করে টেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত অবস্থান করেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘণ্টা দুয়েক অবরোধের পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই এলাকা থেকে সরে যান তাঁরা।

টেকনিক্যাল মোড়ে কল্যাণপুর থেকে গাবতলী হয়ে যাওয়া সব যানবাহন আটকা পড়ে। আবার বিপরীত দিকে সাভার হয়ে ঢাকামুখী দূরপাল্লার গাড়িও এখানে আটকা পড়ে।

যেসব পোশাক কারখানার শ্রমিক রাস্তায় নেমেছিলেন, এর মধ্যে ছিল বেবীলন, অ্যাপারেলস, ডিফাইনারি, আহমেদ ফ্যাশন, এ কে আর, কমফোর্টসহ বেশ কিছু পোশাক কারখানা।

বেবীলনের কোয়ালিটি কন্ট্রোলার মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারের নির্ধারিত বেতন অনুযায়ী আমাদের বেতন বাড়ছে না। ফলে, বেসিকের সঙ্গে সঙ্গে যে ওভারটাইম বাড়ে, তা আর বাড়ছে না।’

ন্যূনতম বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে মিরপুরের বেশ কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করছেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

কমফোর্টের শ্রমিক মোর্শেদা অভিযোগ করেন, ‘সরকার ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করেছে আট হাজার টাকা। আমাদের দিচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি-পশ্চিম) লিটন কুমার সাহা প্রথম আলো বলেন, আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনার পর সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

নতুন মজুরিকাঠামোতে পোশাকশ্রমিকদের নিম্নতম বা ৭ নম্বর গ্রেডে মজুরি বেড়েছে ২ হাজার ৭০০ টাকা। তার মধ্যে মূল মজুরি ১ হাজার ১০০ টাকা। একই হারে অন্যান্য গ্রেডের মজুরিও বেড়েছে। সরল এই অঙ্কের মধ্যেই রয়েছে গলদ। কারণ, প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। সে জন্য ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেডের পুরোনো অনেক শ্রমিক ঘোষিত নতুন মজুরিকাঠামোর সমপরিমাণ মূল মজুরি এখনই পাচ্ছেন। প্রায় প্রতিটি কারখানায় এই তিন গ্রেডেই সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করেন।

মূল মজুরি কম হারে বাড়ানোর পুরোনো কৌশলটি মালিকপক্ষ এবারও নিয়েছে। তার কারণে শেষ পর্যন্ত নতুন কাঠামোতে শ্রমিকের একটি বড় অংশের মূল মজুরি প্রকৃতপক্ষে বাড়েনি। এ কারণে ওভারটাইম ও উৎসব ভাতাও বাড়বে না তাঁদের।

ন্যূনতম বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে মিরপুরের বেশ কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ ও অবরোধ করছেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

আট হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করে গত ২৫ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে শ্রম মন্ত্রণালয়। চলতি মাস থেকে নতুন কাঠামো অনুযায়ী মজুরি পাবেন শ্রমিকেরা। তবে গত মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই মজুরিকাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের শ্রমিকেরা। নির্বাচনের আগে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হলেও নির্বাচনের কয়েক দিন পর প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে। সমস্যা সমাধানে মালিক-শ্রমিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় কমিটি হয়েছে।

আরও পড়ুন... 
আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে