ইন্দোনেশিয়া থেকে পামতেল রপ্তানি বন্ধের এক ঘোষণায় সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার রেকর্ড হয়েছিল। দুই দিনের মাথায় রপ্তানি বন্ধের তালিকা থেকে অপরিশোধিত পামতেল বাদ দেওয়ার খবরে দাম সংশোধন করা হয়েছে ভোজ্যতেল পাম ও সয়াবিনের। অবশ্য চীনের লকডাউন দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কায়ও প্রভাব পড়েছে এ বাজারে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো নিজ দেশের বাজার সহনীয় রাখতে গত শুক্রবার পামতেল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেন, যা কার্যকর হবে ২৮ এপ্রিল থেকে। এ ঘোষণার পর শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য লেনদেনের বাজার শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) সয়াবিনের দর ওঠে টনপ্রতি ১ হাজার ৮৩৫ ডলারে। এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ধারাবাহিকভাবে দাম বেড়ে গত ১১ মার্চ দর উঠেছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮১২ ডলারে।
গতকাল সোমবার বাজার খোলার দিন ইন্দোনেশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয় রপ্তানি বন্ধের তালিকা থেকে অপরিশোধিত পামতেল বাদ যাবে বলে জানিয়েছে। এ খবরের পর সয়াবিন ও পামতেলের দাম সংশোধন করা হয়। যেমন সিবিওটিতে সামান্য সংশোধিত হয়ে সয়াবিনের দাম নেমে আসে টনপ্রতি ১ হাজার ৮২৪ ডলারে। টনপ্রতি দাম কমেছে প্রায় ১১ ডলার। অন্যদিকে, অপরিশোধিত পামতেলের দাম টনপ্রতি প্রায় ১১ ডলার কমে ১ হাজার ৪৩৫ দশমিক ৭৫ ডলারে নেমে আসে। সামান্য কমলেও ভোজ্যতেলের বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থেমেছে।
পণ্যবাজার বিশ্লেষক আসির হক প্রথম আলোকে বলেন, সয়াবিন ও পামতেলের দাম সংশোধন করা হয়েছে মূলত দুটি কারণে। এক. ইন্দোনেশিয়া আরেক ঘোষণায় অপরিশোধিত পামতেল রপ্তানি বন্ধের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। দুই. চীনের লকডাউনে চাহিদা কমেছে। জ্বালানি তেলের দাম কমায়ও সব ধরনের পণ্যের দাম সংশোধন করা হয়েছে বলে যোগ করেন তিনি।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ইন্দোনেশিয়া পরিশোধিত পামতেলের রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত খুব বেশি দিন ধরে রাখতে পারবে না। ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় তাজা পামফলের দাম কমেছে। রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত কৃষকদের ক্ষতির মুখে ফেলবে বলে গতকাল প্রধান শিরোনাম করেছে দেশটির দৈনিক পত্রিকা দ্য জাকার্তা পোস্ট।
বাংলাদেশের পামতেলের ৯০ শতাংশ আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। মূলত, মালয়েশিয়ার চেয়ে তুলনামূলক কম দামের কারণেই ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানির প্রধান কারণ। মালয়েশিয়া থেকে আমদানি হয় ১০ শতাংশ। পামতেলের শীর্ষ রপ্তানিকারকও মূলত এই দুই দেশ।
ইন্দোনেশিয়া অপরিশোধিত পামতেল রপ্তানি করার ঘোষণায় দেশটি থেকে আমদানির সুযোগ অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের আমদানিকারকেরা পরিশোধিত ও অপরিশোধিত আকারে পামতেল আমদানি করে। একসময় সিংহভাগ অপরিশোধিত আকারে আমদানি করলেও এখন তা কম। তবে পরিশোধনের কারখানা থাকায় অপরিশোধিত পামতেলের আমদানি বাড়বে।