বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থ পুরোটাই ফেরত আনা যাবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক। অচিরেই এ টাকা ফেরত আনা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
আজ বুধবার সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এই আশাবাদের কথা জানান ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান ও নাজনীন সুলতানা এবং নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত বাংলাদেশের স্থিতি থেকে হ্যাক করে অর্থ চুরি করা হয়েছে। এর একটি অংশ গেছে শ্রীলঙ্কায়, আরেকটি অংশ গেছে ফিলিপাইনে। সম্প্রতি ফিলিপাইনের একটি ইংরেজি দৈনিকে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তাতে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফিলিপাইনে পাচার হওয়ার কথা উল্লেখ ছিল।
গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোট ৮০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ডলার চুরি করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়। তবে চুরি যাওয়া অর্থের বড় অংশই উদ্ধার করা যায়নি।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের ইনকোয়েরারের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ফিলিপাইন থেকে ১০ কোটি ডলার বা ৮০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। এটিই ফিলিপাইনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থ পাচারের ঘটনা। যার একটি অংশ বাংলাদেশি ব্যাংক থেকে গেছে।
বাংলাদেশ থেকে কীভাবে ফিলিপাইনে অর্থ পাচার হয়ে গেল, সে সম্পর্কে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দেশটির মাকাতি শহরে অবস্থিত রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের একটি শাখার মাধ্যমে ওই অর্থ ফিলিপাইনে আসে। এতে ওই ব্যাংকটির শাখা ব্যবস্থাপকের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এরপর অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ফিলরেম নামের এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তা চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এভাবে হাতবদল হয়ে সবশেষে ফিলরেমের মাধ্যমে ওই ১০ কোটি ডলার ফিলিপাইন থেকে আবার অন্য দেশে পাচার হয়ে যায়। আর যে তিনটি ক্যাসিনোর হাত ঘুরে তা অন্য দেশে পাচার হয়েছে, সেগুলো হলো সোলাইরি রিসোর্ট অ্যান্ড ক্যাসিনো, সিটি অব ড্রিমস ম্যানিলা ও মাইডাস হোটেল অ্যান্ড ক্যাসিনো।