গত ২৫ বছরে যুক্তরাজ্যে নারী ও পুরুষের বেতনের ব্যবধানে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। যেটুকু কমেছে তা মূলত নারীদের শিক্ষাগত দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা দ্য ইনস্টিটিউট ফর ফিসকেল স্টাডিজের (আইএফএস) একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারী-পুরুষের বেতন ব্যবধান কিছুটা কমলেও তা হয়েছে কর্মক্ষেত্রে কম বেতনে সাধারণ শিক্ষিত নারীদের অধিক সংখ্যায় অংশগ্রহণের কারণে।
খণ্ডকালীন কাজে নিযুক্ত নারীদের একটি বড় অংশও এই ব্যবধান কমাতে সাহায্য করেছে। কিন্তু উচ্চ বেতনে স্নাতক ডিগ্রিধারী নারীদের বেতনবৈষম্যে এখনো তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। যদিও যুক্তরাজ্যের সরকার দাবি করেছে যে লিঙ্গভেদে বেতন ব্যবধান ‘উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে’।
আইএফএস ডেটন রিভিউ অব ইনইকুয়ালিটিসের অংশ হিসেবে করা এই গবেষণা প্রতিবেদনটি নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান, কর্মঘণ্টা ও মজুরি—এই তিনটি মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।
এতে গবেষকেরা দেখেছেন যে চাকরি করতে সক্ষম নারীরা সমবয়সী পুরুষদের তুলনায় মাসে ৫০ ঘণ্টারও বেশি বিনা বেতনে কাজ করেন। পরিবারে সন্তান পালনের দায়িত্ব আসার পরে কাজের সময়ের এই ব্যবধান আরও বেড়ে যায়। পাশাপাশি বেতনের ক্ষেত্রে বৈষম্যের কারণে একক মায়েরা অধিক দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
গবেষণায় উঠে এসেছে, যুক্তরাজ্যে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা পুরুষের তুলনায় বেশি। তবে ২০১৯ সালেও দেশটির কর্মজীবী নারীরা তাঁদের সমবয়সী পুরুষদের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম আয় করতে পারতেন। অর্থাৎ, শিক্ষিত হলেও বেতনের পরিমাণ খুব একটা বাড়েনি নারীদের।
গবেষণাটি নিয়ে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের দ্য ইনক্লুশন ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক গ্রেস লর্ডান বলেন, ‘আমি এই ফলাফল দেখে একদম অবাক হইনি। এমনকি যখন পুরুষ ও নারী সমমানের কোনো ডিগ্রি নেন, তখনো নারীরা কম বেতন পান। এই ব্যবধান কমাতে সরকারকে কোম্পানিগুলোকে বেতন ব্যবধান কমানোর ওপর জোর দিতে বলেন এই অর্থনীতিবিদ।’