সিপিডি-এশিয়া ফাউন্ডেশনের গবেষণা

মনমতো কাজ পান না সিলেট শহরের ৭৩% যুবক

‘প্রান্তিক যুবসমাজের কর্মসংস্থান সরকারি পরিষেবার ভূমিকা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সাইফুল ইসলাম
‘প্রান্তিক যুবসমাজের কর্মসংস্থান সরকারি পরিষেবার ভূমিকা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবি: সাইফুল ইসলাম

সিলেট শহরের ৭৩ শতাংশ যুবক নিজের এলাকায় পছন্দমতো কাজ পান না। আর ঠাকুরগাঁওয়ের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার যুবকদের ২৬ শতাংশ নিজের এলাকায় চাহিদামতো কাজের সুযোগ কম বলে মনে করেন।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও এশিয়া ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। গবেষণার শিরোনাম ‘প্রান্তিক যুবসমাজের কর্মসংস্থান সরকারি পরিষেবার ভূমিকা’। এই গবেষণার ওপর আজ মঙ্গলবার স্থানীয় এক হোটেলে সংলাপ হয়। সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন, যাঁদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ।

গবেষণায় আরও বলা হয়, শতভাগ বস্তিবাসী যুবগোষ্ঠী, প্রায় শতভাগ ক্ষুদ্র জাতিসত্তার যুবগোষ্ঠী এবং ৮ শতাংশ মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর পরিবারের বসতভিটা নেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রায়ই উচ্ছেদের হুমকির মুখে থাকতে হয়। ৭ শতাংশ বস্তিবাসী ও তার পরিবার বাসস্থান থেকে উচ্ছেদের শিকার হয়েছে। এর ফলে যুবকদের শৈশবজীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটে।

সমতলের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজন ও সিলেটে শহুরে যুবগোষ্ঠীর প্রায় ৫০ শতাংশই মনে করেন, তাঁদের স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানের অর্ধেক। মতামত প্রদানকারীদের ৬০ শতাংশ মনে করেন, স্থানীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মানের অর্ধেক।

গবেষণায় আরও বলা হয়, পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক যুবগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানে চারটি চ্যালেঞ্জ আছে। এগুলো হলো জীবন ও জীবিকা, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর সরকারি উদ্যোগ কম।

অনুষ্ঠানে সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেন, চাকরির বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ মানবসম্পদ জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকার উচ্চ প্রবৃদ্ধির দিকে জোর দিচ্ছে। কিন্তু এই অর্থনীতিতে বছরে কত লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ মুজিবুল হক নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, পোশাক খাতে স্যুট কাটিং মাস্টার চাহিদা আছে, কিন্তু দক্ষ লোক না থাকায় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান থেকে লোক আনতে হচ্ছে। এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গলদ আছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাংসদ নাহিম রাজ্জাক, বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানা, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক তাহসিন আহমেদ, জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সভাপতি সারাহ কামাল, বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর প্রমুখ।