আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন এবং ঋণের সুদ বাবদ বরাদ্দ ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। এনবিআরের রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটের আকার ৬,০৩,৬৮১ কোটি টাকা, এর মধ্যে ঋণ নিতে হবে ২,১৪,৬৮১ কোটি টাকা।
আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক-কর বাবদ এনবিআরের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ৩,৩০,০০০ কোটি টাকা।
সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন ও সুদ পরিশোধে বরাদ্দ ১,৬৬,৫৫৩ কোটি টাকা।
বেতন-ভাতায় ৬৯,৭৫৫ কোটি, সুদ পরিশোধে ৬৮,৫৮৯ কোটি এবং পেনশনে ২৮,২০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ।
২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী এক লাফে বেতন বেড়েছিল ১০১ শতাংশ।
সরকারি চাকরি থেকে অবসরভোগীদের জন্য উচ্চ সুদের বেশি সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ রাখা আছে।
সরকারের বিশাল বাজেটের বড় অংশই খরচ হয় মূলত তিনটি খাতে। সেগুলো হলো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন এবং সরকারের নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধ। এ তো গেল মূল বাজেটের হিসাব। একটি বাজেটের দুটি অংশ থাকে—উন্নয়ন বাজেট এবং অনুন্নয়ন বা রাজস্ব অথবা পরিচালন বাজেট। দেখা যাচ্ছে, সরকারের পরিচালন বাজেটের ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ অর্থই ব্যয় হচ্ছে এই তিন খাতে।
বেতন-ভাতা বাবদ বিপুল বরাদ্দ রাখা হলেও সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকে জনগণকে সেবার মান কতটা বাড়ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দুর্নীতি কমেছে এমনটাও কেউ মনে করছেন না। সরকারি সেবার মান যাচাইয়ের তেমন কোনো ব্যবস্থাও সরকার রাখেনি।
আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট পরিচালন বাজেট ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। আর বেতন-ভাতা, পেনশন ও সুদ পরিশোধ করতেই খরচ হবে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। করোনার সময়ে এই পরিমাণ রাজস্ব আদায় নিয়েও সন্দেহ আছে বিশেষজ্ঞদের। তবে আদায় শেষ পর্যন্ত যা-ই হোক না কেন, বেতন-ভাতা, পেনশন এবং সুদ পরিশোধে ব্যয় কমবে না এক টাকাও।
একটি অর্থবছরের বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় যা–ই নির্ধারণ করা হোক না কেন, বছর শেষে কাটছাঁট করা যায়। কিন্তু পরিচালন ব্যয়ে তেমন হাত দিতে পারেন না অর্থমন্ত্রীরা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ৬১ শতাংশই পরিচালন ব্যয়। দেশে বরাবরই বেতন-ভাতা ও সুদ পরিশোধ খাতে ব্যয় বেশি হয়। তবে গত এক দশকে দুই দফায় বেতনকাঠামো বাস্তবায়ন করায় এ খাতের বাজেট অনেক বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে পেনশন ব্যয়। সরকারি চাকরিতে বেতন কম—এ কথা এখন আর কেউ বলেন না। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকারি চাকরির প্রতি আগ্রহও অনেক বেড়েছে। অন্যদিকে, বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকারকে ব্যয়বহুল ঋণ করতে হচ্ছে। এতে সুদ পরিশোধ খাতেও অনেক বেশি অর্থ রাখতে হচ্ছে।
সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়বে, পেনশনও দিতে হবে। এটাই সংগত। এ দুয়ে হাত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে দরকার হচ্ছে কর ব্যবস্থাপনার সংস্কার। এতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। অনেক কর ফাঁকি আছে দেশে। এগুলো উদ্ধার করার কৌশল ঠিক করতে হবে। তাহলেই আর কোনো প্রশ্ন উঠবে না।
প্রতিবছর সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ বাড়ছে। আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ পরিচালন বাজেটের যে অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করেছে, সে অনুযায়ী তা ১৯ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। বেতন-ভাতার মোট আকারের মধ্যে বেতন ৩৬ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা আর ভাতা ৩২ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ খরচ হয়েছিল ৫৬ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরে এ বাবদ ৬৫ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সংশোধিত বাজেটে তা কমানো হয় ২৪৩ কোটি টাকা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেওয়া একটি ভাষণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনা দেয় ওই গরিব কৃষক। আপনার মাইনা দেয় ওই গরিব শ্রমিক। আপনার সংসার চলে ওই টাকায়। আমরা গাড়ি চড়ি ওই টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন। ওরাই মালিক। সরকারি কর্মচারীদের বলি, এটা স্বাধীন দেশ। এটা ব্রিটিশের কলোনি নয়। পাকিস্তানের কলোনি নয়।’
কয়েকটি প্রমাণ দিলেই বোঝা যাবে একশ্রেণির সরকারি কর্মচারীর সেই মানসিকতা কতটা বদলেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) স্যার না বলায় গত বছরের ১৫ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করেন নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম। স্যারের পরিবর্তে ভাই বলে সম্বোধন করায় গত ৩০ মে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাশ মনঃক্ষুণ্ন হন স্থানীয় সাংবাদিক রফিকুল ইসলামের প্রতি।
১০ বছর আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে সরকারের মোট খরচ হয়েছিল ২১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এই বেতন-ভাতা ১০১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন কমিশনের সুপারিশের পর। দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বাজেটে ২৮ হাজার ৮২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক লাফে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ হাজার ৪৩ কোটি টাকা।
বেতনের সঙ্গে সরকারি কর্মচারীরা নানা ধরনের ভাতা পান। যেমন বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত বিনা সুদে গাড়ি কেনার যে সুযোগ দিয়ে রেখেছে সরকার, সেই গাড়ির তেল খরচ বাবদই প্রতি মাসে একেকজন পাচ্ছেন মোট বেতন-ভাতার সমান অর্থ। এ ছাড়া রয়েছে টেলিফোন, ভ্রমণ, গৃহকর্মী, ডোমেস্টিক এইড, আপ্যায়ন, শ্রান্তি ও বিনোদন ইত্যাদি ভাতা। আর নিচের গ্রেডের কর্মচারীরা পান যাতায়াত, টিফিন ও সন্তানের শিক্ষা ভাতা।
সরকারি চাকরিতে আরও ব্যতিক্রম ধরনের ভাতা রয়েছে। যেমন ধোলাই ভাতা, কার্যভার ভাতা, পাহাড়ি ও দুর্গম ভাতা, বিশেষ ভাতা, অবসর ভাতা, কিট ভাতা, রেশন ভাতা, ঝুঁকি ভাতা, ক্ষতিপূরণ ভাতা, প্রেষণ ভাতা, ইন্টার্নি ভাতা, প্রশিক্ষণ ভাতা, মহার্ঘ ভাতা, অধিকাল ভাতা, বিশেষ গার্ড ভাতা ইত্যাদি। অবশ্য এসব ভাতা সবাই পান না। দেশের ভেতরে ভ্রমণ ভাতা দেওয়া হয় এলাকা ও কিলোমিটার অনুযায়ী। বিদেশে ভ্রমণে করলে প্রতিদিনের থাকা-খাওয়ার জন্য ভাতা দেওয়া হয়। আর বিশেষ ভাতা দেওয়া হয় বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব আলী ইমাম মজুমদার এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এখনো সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কম। দেশে যাঁরা বেশি আয় করেন, তাঁরা কম কর দেন। যদি কর-জিডিপি অনুপাতটা আরেকটু বাড়ত, তাহলে তাঁদের আরও বেশি বেতন-ভাতা সরকার দিতে পারত। কিন্তু বাড়ানোর পথটাও তাঁদেরই তৈরি করতে হবে। এখানে দক্ষতার একটা ঘাটতি আছে।’
আলী ইমাম মজুমদার আরও বলেন, ‘কর কম হওয়ার কারণেই সরকারকে বেশি ঋণ নিতে হয়। তা–ও আবার স্বল্প সুদের বিদেশি নয়, বরং বেশি সুদের দেশি ঋণ। এ কারণেই সুদ ব্যয় বেশি হচ্ছে। আর পেনশনও খুব বেশি দেওয়া হয় না দেশে। আমি যেটুকু বুঝি, সবার আগে কর আহরণের সামর্থ্য বাড়াতে হবে। তাহলেই মিলবে অনেক সমস্যার সমাধান।’
বাজেটে আগামী অর্থবছরে সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। পরিচালন বাজেটের তা ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। দেশি-বিদেশি উৎস থেকে সরকার যে ঋণ নেবে, তার সুদ পরিশোধ করতে এ অর্থ ব্যয় হবে।
আগামী অর্থবছরে ঋণ পরিশোধের ৯০ শতাংশই বরাদ্দ থাকছে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে। বাকিটা বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধের ব্যয়। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধের মধ্যে রয়েছে সঞ্চয়পত্রের সুদ, ব্যাংকের মেয়াদি ঋণের সুদ, সরকারি কর্মচারীদের ভবিষ্য তহবিল বা জিপিএফের সুদ, চলতি ঋণ এবং জীবনবিমা ও অন্যান্য ঋণের সুদ পরিশোধ।
আগামী অর্থবছরে সুদ পরিশোধ বাবদ যে ব্যয় ধরা হয়েছে, তার মধ্যে ৬২ হাজার কোটি টাকাই থাকছে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে, আর ৬ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদের মধ্যে ৩৮ হাজার কোটি টাকাই হচ্ছে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদ। দুই বছর আগের তুলনায় তা ১০ হাজার কোটি টাকা বেশি।
সুদ ব্যয় এত বেশি হওয়ার কারণ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা দেখার দায়িত্ব অর্থ বিভাগের। তিন মাস পর পর এ বিভাগ একটি করে বৈঠক করলেও বাস্তবে এ বিষয়ে তাদের কোনো উদ্ভাবন নেই। এ খাতে কোনো সংস্কারেরও উদ্যোগ নেই। সংস্কারের বড় বাধা হিসেবে বিভিন্ন স্বার্থগোষ্ঠীর কথাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যেমন ৩৮ হাজার কোটি টাকা সঞ্চয়পত্রের সুদ বাবদ যে বরাদ্দ, তার উল্লেখযোগ্য অংশের সুবিধাভোগী সরকারি কর্মচারীরাই।
অথচ বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধে এত বেশি টাকা বরাদ্দ রাখার কারণে সরকারের অনেক অগ্রাধিকার খাত ভালো বরাদ্দ পাচ্ছে না। প্রতিবছর বাজেটের আকার বাড়লেও তাল মিলিয়ে রাজস্ব আয় বাড়ছে না। এ কারণে বাজেট বাস্তবায়নে বেড়ে যাচ্ছে ঋণনির্ভরতা। সংগত কারণেই বাড়ছে ঋণের সুদ ব্যয়। অর্থ বিভাগের বাজেট তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত পাঁচ অর্থবছরের ব্যবধানে ঋণের সুদ ব্যয় বেড়েছে প্রায় শতভাগ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে সুদ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।
পেনশনের বরাদ্দকে সরকারি ভাষায় বলা হয় অবসর ভাতা ও আনুতোষিক। আগামী অর্থবছরে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মচারীদের পেনশন বাবদ ২৮ হাজার ২০৯ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। পেনশনে চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে বরাদ্দ রাখা ছিল ২৭ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা। দুই বছরের ব্যবধানে পেনশনভোগীদের ভাতা ১২ হাজার ৫২ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।
সরকারি চাকরি থেকে অবসরভোগীদের জন্য সরকার আলাদা করে একটি সঞ্চয়পত্র চালু করেছে, যার নাম পেনশনার সঞ্চয়পত্র। এতে বিনিয়োগসীমা ও মুনাফার হার সবচেয়ে বেশি। ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের বিপরীতে অর্জিত মুনাফার ওপর কোনো উৎসে কর কাটা হয় না। আবার পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে মুনাফার সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা প্রিমিয়ামও (এসএসপি) দেওয়া হয় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের।
একক নামে অন্যরা ৫০ লাখ বা যৌথ নামে এক কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারলেও অবসরভোগী সরকারি কর্মচারীরা একক নামে এক কোটি বা যৌথ নামে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারেন। মুনাফার হারও ৫ বছর মেয়াদে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের বছরের জুলাই থেকে ছয় বছর ধরে মুনাফার এই হার বহাল রয়েছে।
অবসরভোগী সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানেরা এ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে যত সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়, তার ৭ শতাংশই হচ্ছে পেনশনার সঞ্চয়পত্র।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, ‘ভালো হতো যদি সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সঙ্গে তাঁদের কর্ম–কৃতির কোনো সংযোগ থাকত। এ ব্যাপারে সরকার কতটা সৃষ্টিশীল হতে পারবে, সেটা একটা প্রশ্ন। আর সুদ ব্যয় কমানোর অনেক পথ আছে। দরকার যথাযথ নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা, কিন্তু প্রথাগত আমলাতন্ত্র তা করতে ব্যর্থ। কোন কোন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে, সেই বিশ্লেষণ না থাকায় সহজ পথ হিসেবে সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রিকে বেছে নিচ্ছে। একে করের টাকার যথাযথ ব্যবহার কিছুতেই বলা যায় না।’