বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিমানবন্দর খুলে দিচ্ছে গ্রিস। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোতাকিস। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল সান্টোরিনি পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি এই ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস বলেন, সান্টোরিনিতে এসে তিনি খুবই আনন্দিত। গ্রিস এই গ্রীষ্মে পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানাতে প্রস্তুত। তবে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের বিষয়টি এক নম্বর অগ্রাধিকারে থাকবে।
লকডাউনের কারণে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল সোমবার খুলে দেওয়া হচ্ছে দেশটির প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। দেশটির অর্থনীতিতে পর্যটন খাতের অবদান প্রায় ২০ শতাংশ। এ ছাড়া ঋণ সংকটে থাকা গ্রিসের অর্থনীতির জন্য লকডাউন খুবই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বালুময় সৈকত ও অসাধারণ সূর্যাস্তের জন্য বিখ্যাত গ্রিসে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ঘুরতে যান। গত বছর প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ পর্যটক গ্রিস সফর করেন। এই খাত থেকে সরকারের আয় হয় প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি ইউরো।
তবে এবার বড় পর্যটন স্থানগুলোয় জরুরি স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে চিকিৎসাকর্মীর সংখ্যা।
এ ছাড়া বিমানবন্দরে বিদেশ থেকে আসা সব মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হবে। ফলাফলের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনার বিস্তার কিছুটা কমে আসায় ধীরে ধীরে পুরো ইউরোপে বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যটন মন্ত্রীরা ইউরোপীয় পর্যটন খাতকে দ্রুত ও পূর্ণ পুনরুদ্ধারে সব উপায় গ্রহণ করার বিষয়ে সম্মত হন। এরপরই গ্রিস সরকার জুনে পর্যটন মৌসুম খুলে দেওয়ার কথা জানায়।
পর্যটকদের উৎসাহিত করতে গ্রিস অস্থায়ীভাবে সব পরিবহন ভ্রমণের ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) কমিয়ে দিয়েছে। বিমান ও বাস যাত্রায় ভ্যাট ২৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৩ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে, ভ্রমণ আরও সস্তা হয়েছে।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় গ্রিসের ভূমিকা বেশ প্রশংসনীয়। মার্চ থেকে লকডাউন থাকায় দেশটিতে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার মানুষ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় তা বেশ কম। তবে এই লকডাউন গ্রিসের পর্যটন খাতে স্থবিরতা এনেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছর দেশটির অর্থনীতি ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সংকুচিত হবে।