করোনা ভাইরাসের কারণে নাগরিকেরা ঘরে আটকা পড়েছে। এই সংকটে লেনদেন ও বিভিন্ন বিল পরিশোধে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেছে নিচ্ছেন গ্রাহকেরা। দেশের বেশির ভাগ এজেন্ট বন্ধ, এরপরও বিকাশে দৈনিক ৫৭ লাখ লেনদেন হচ্ছে, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি।
পাশাপাশি করোনাভাইরাসের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও ওষুধ কেনাকাটায় কোনো মাশুল নিচ্ছে না বিকাশ। মাসিক লেনদেন সীমা ৭৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ২ লাখ টাকা হয়েছে। আবার ১ হাজার টাকা উত্তোলনে কোনো মাশুলও লাগছে না।
বিকাশের কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রাহকেরা এখন পরিষেবা বিল পরিশোধ, নিত্যপণ্য ও ওষুধ কেনাকাটা এবং অন্যদের কাছে বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন। গ্রাহকেরা চাইলেই যেকোনো সময় ব্যাংক থেকে টাকা বিকাশ হিসাবে নিতে পারছেন। ফলে অনেক এজেন্ট বন্ধ থাকলেও বিকাশের সেবা থেমে নেই। ২৪ ঘণ্টাতেই মিলছে বিকাশের সেবা।
জানা যায়, ২৬ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের সাধারণ ছুটি শুরু হয়েছে। এরপর থেকে প্রতিদিনই ৫৭ লাখ লেনদেন হচ্ছে, টাকার অঙ্কে যা সাড়ে ৪০০ কোটি। এক দিনেই সারা দেশের দেড় লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করেছেন। বিকাশের মাধ্যমে কোথাও না গিয়ে ঘরে বসে বিদ্যুৎ, গ্যাসের বিল প্রদান, মোবাইল রিচার্জ, সেন্ডমানি, অ্যাডমানি, পরিশোধসহ বিভিন্ন সেবা মিলছে। স্বাভাবিক সময়ে বিকাশের মাধ্যমে দৈনিক প্রায় এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হতো।
পাশাপাশি জনস্বার্থে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বিকাশ। এর মধ্যে অন্যতম হলো বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তা সংগ্রহ। করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ফাউন্ডেশনটি। তহবিল সংগ্রহ সহজ করতে বিকাশ অ্যাপের সাজেশন বক্সে সরাসরি যুক্ত হয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের লোগো। এতে সহজেই বিকাশের গ্রাহকেরা সহায়তা করতে পারছেন। একইভাবে আরও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, ক্লাব এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান করোনা পরিস্থিতিতে জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আর্থিক সহায়তা বিকাশের মাধ্যমে সংগ্রহ করছেন।
বিকাশ জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও ওষুধ কেনায় কোনো মাশুল নিচ্ছে না বিকাশ। এই বিশেষ পরিস্থিতিতে জরুরি সেবা হিসেবে বিকাশের সব সেবা নিরবচ্ছিন্ন, নির্বিঘ্ন এবং নিরাপদ রাখতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন বিকাশের সব কর্মী। এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে নগদ টাকা এবং ডিজিটাল মানি সরবরাহও নিশ্চিত করা হয়েছে। বিকাশ গ্রাহকেরা এই জরুরি সময়ে যেকোনো ধরনের সমস্যা সমাধানে ‘কাস্টমার সার্ভিস’ সেবা পাচ্ছেন। ১৬২৪৭ নম্বর, বিকাশের ফেসবুক পেজ, লাইভ চ্যাট এবং ই–মেইলের মাধ্যমে সার্বক্ষণিকভাবে গ্রাহকদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
পাশাপাশি করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সাধারণকে জানাতে উদ্যোগ নিয়েছে বিকাশ। এ জন্য তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য ও করণীয় বিষয়ে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করতে বিকাশ অ্যাপের মেনুতে যোগ হয়েছে ‘করোনা ইনফো’।
জানতে চাইলে বিকাশের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা গ্রাহকদের পাশে দাঁড়িয়েছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটায় মাশুল নেওয়া হচ্ছে না। করোনাভাইরাস সম্পর্কেও গ্রাহকদের সচেতন করা হচ্ছে।