একটি কার্ড দিয়ে সারা বিশ্বেই লেনদেন করা যায়। বিমানবন্দরে পাওয়া যায় উষ্ণ অভ্যর্থনা। আবার মেলে নানা ছাড়ও। একটি ব্র্যান্ডের কার্ড যে এত সুবিধা ও সম্মান দিতে পারে, তা অনেকের কাছেই অজানা ছিল। তবে ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ সেবাটি পাচ্ছেন। বলছিলাম ১৭০ বছর ধরে কার্ড সেবা দেওয়া আমেরিকান এক্সপ্রেস বা এমেক্স কার্ডের কথা।
বাংলাদেশে এমেক্সের কার্ড সেবা শুরু হয় ২০০৯ সালে। সেই হিসাবে গত নভেম্বরে ১০ বছর পূর্তি হয়েছে সেবাটির। বেসরকারি খাতের দি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে কার্ড সেবা দেয় এমেক্স। আর এমেক্সের কারণে বাংলাদেশে কার্ড সেবায় শীর্ষে সিটি ব্যাংক।
১৮৫০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাত্রা শুরু করে আমেরিকান এক্সপ্রেস বা এমেক্স। কার্ড সেবা ও ট্রাভেলার চেকের জন্য বিশ্বখ্যাত এমেক্স। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ২০ শতাংশের বেশি নিয়ন্ত্রণ করে এমেক্স। ফরচুন ১০০ বেস্ট কোম্পানির ফর ওয়ার্কের মধ্যে এমেক্সের অবস্থান ২৩। আর ফরচুন ৫০০ শীর্ষ কোম্পানিতে এমেক্সের অবস্থান ৮৬।
সিটি ব্যাংক এমেক্স কার্ডের এ দেশের একমাত্র প্রতিনিধি। সেটির কল্যাণে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের বেশির ভাগই তাদের অধীনে। যদিও এর বাইরে প্রাইম ব্যাংক জেবিসি কার্ড, ইস্টার্ণ ব্যাংক ডাইনার্স ক্লাব কার্ড, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক নেক্সাস পে–কার্ড ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ইউনিয়ন পে–ইন্টারন্যাশনাল কার্ডের সেবা দিচ্ছে।
সিটি ব্যাংক সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ২০০৯ সালের ৯ নভেম্বর এমেক্সের সেবা শুরু হয়। পরের বছরই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিটি ব্যাংক এমেক্স এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ চালু হয়। এর মাধ্যমে দেশের বিমানবন্দরে প্রথম কোনো ব্যাংকের লাউঞ্জ চালু হয়। ২০১২ সালে ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য রিওয়ার্ড পদ্ধতি চালু করে সিটি ব্যাংক ও এমেক্স। এর ফলে গ্রাহকেরা কার্ড ব্যবহারে নির্দিষ্ট পরিমাণ পয়েন্ট পাচ্ছেন, যা দিয়ে আবারও কেনাকাটা করা যায়। ২০১৩ সালে প্রিমিয়াম এমেক্স প্লাটিনাম কার্ড চালু হয়। এর ফলে ২০১৪ সালেই দেশের কার্ড সেবায় শীর্ষস্থানে নেয় সিটি ব্যাংক। এমেক্সের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাংকটির এ সফলতা। ২০১৭ সালে সুপারশপ আগোরা ও ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কো–ব্র্যান্ডেড কার্ড চালু হয়। চলতি বছরে শুধু নারীদের জন্য সিটি আলো কার্ড চালু করে সিটি ব্যাংক।
জানা যায়, ক্রেডিট কার্ডের পাশাপাশি ডেবিট কার্ডেও এমেক্স ব্র্যান্ডের সেবা দেয় সিটি ব্যাংক। ১০ বছরে এমেক্সের কার্ডে প্রায় ২ কোটি বার লেনদেন হয়েছে। ১০ বছরে এমেক্সের কার্ডে লেনদেন হয়েছে ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সারা দেশে কার্ড সেবা দিতে এমেক্সের রয়েছে ২৬ হাজার ৫০০ পয়েন্ট অব সেলস মেশিন। এর ফলে বাজারে কার্ড সেবার ৩০ শতাংশ সিটি ব্যাংক ও এমেক্সের।
জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘আমরা এমেক্সকে সঙ্গে নিয়ে আরও বহুদূর যেতে চাই। শহরের গ্রাহকেরা আমাদের সেবায় এসেছে। ভবিষ্যতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এমেক্স ছড়িয়ে দিতে চাই।’