ব্যাংকগুলো এখন থেকে আবাসন খাতে ফ্ল্যাট কেনায় দুই কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারবে, যা আগে ছিল এক কোটি ২০ লাখ টাকা। ব্যাংকগুলোর দাবির মুখে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পাঠিয়েছে।
জানা যায়, ৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) প্রতিনিধিরা। বৈঠকে এবিবির পক্ষ থেকে গৃহঋণের সর্বোচ্চ সীমা এক কোটি ২০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই কোটি টাকায় উন্নীত করার দাবি জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গৃহনির্মাণ সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, দেশে উচ্চতর মধ্যবিত্ত গোষ্ঠীর সংখ্যাবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি ও আবাসনের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে প্রজ্ঞাপনে গৃহঋণ ও মূলধনের অনুপাত আগের মতোই ৭০:৩০ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এক কোটি টাকার ফ্ল্যাট কিনতে ব্যাংক ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থায়ন করতে পারবে। বাকি ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে গ্রাহককেই। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য হচ্ছে না। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে ফ্ল্যাটের দামের পুরো অর্থই ঋণ হিসেবে দিতে পারবে।
এদিকে, আবাসন খাতকে চাঙা করতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের দাবি করে আসছেন দেশের আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিহ্যাবের নেতারা। এ জন্য তাঁরা ২০ হাজার কোটি টাকার পুনঃ অর্থায়ন তহবিলের দাবি করছেন। তবে সে বিষয়ে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। ব্যাংকগুলো বর্তমানে গৃহঋণের বিপরীতে ১০ শতাংশের ওপরে সুদ নিচ্ছে।
অবশ্য গৃহঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করায় গ্রাহকেরা লাভবান হবেন বলে মন্তব্য করেছেন রিহ্যাবের সভাপতি আলগমীর শামসুল আলামিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয়। কারণ এক কোটি ২০ লাখ টাকায় বর্তমানে অনেক এলাকাতেই ভালো ফ্ল্যাট পাওয়া যায় না। ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করার কারণে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত উভয় শ্রেণিই লাভবান হবে।
রিহ্যাবের সভাপতি আরও বলেন, বর্তমানে অধিকাংশ ব্যাংকই ১১-১৩ শতাংশ সুদে গৃহঋণ দিচ্ছে। তবে এত উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে কোনো গ্রাহকই লাভবান হতে পারেন না। সুদের হার অবশ্যই এক অঙ্কের ঘরে নিয়ে আসতে হবে। এ জন্য সরকারের নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।