পরিবেশবান্ধব তৈরি পোশাক কারখানার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকি দূর করার পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বাড়ানো সম্ভব। একই সঙ্গে উৎপাদন খরচ হ্রাস ছাড়াও নতুন ‘ব্র্যান্ড ইমেজ’ গড়া যায়।
ঢাকার কানাডীয় হাইকমিশন ও তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর যৌথ আয়োজনের ‘গ্রিনিং আরএমজি অ্যাজ সিএসআর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বিজিএমইএ ভবনের অ্যাপারেল ক্লাবে গতকাল মঙ্গলবার সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
আমেরিকার ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) ‘লিড’ নামে পরিবেশবান্ধব কারখানার সনদটি দিয়ে থাকে। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হচ্ছে লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। এ সনদ পেতে একটি প্রকল্পকে নির্মাণ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত কম কার্বন নিঃসরণ, কম পানির ব্যবহারে দক্ষতা, পুনঃ উৎপাদিত উপকরণ ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়ে নজর দিতে হয়।
বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ২৬টি পোশাক কারখানা লিড সনদ পেয়েছে। ১০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা স্থাপনের জন্য ইউএসজিবিসিতে নিবন্ধন করেছে। পোশাক কারখানায় জ্বালানি ও দক্ষ প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে আমাদের উদ্যোক্তাদের মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জার্মান সংস্থা জিআইজেডের সঙ্গে একটি প্রকল্পের অধীনে পোশাক কারখানায় পানি ব্যবহার হ্রাস ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর বিষয়ে কাজ করছি।’
ঢাকায় নিযুক্ত কানাডীয় হাইকমিশনার বেনোয়িট পিয়েরে লারামি বলেন, ‘নিরাপত্তা ও শ্রম অধিকার বিষয়ে বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে অনেক উন্নতি করেছে। এটি টার্নিং পয়েন্ট।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি কারখানা ইউএসজিবিসির পরিবেশবান্ধব কারখানার সনদ পেয়েছে। বেশ কিছু কারখানা নিবন্ধন করেছে। এটি অসাধারণ উন্নতি এবং উৎসাহব্যঞ্জক।’ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প। এ জন্য উদ্যোক্তারা কানাডার সহায়তা নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন হাইকমিশনার।
বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, ব্যবসায়ীরা পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটি অবশ্যই প্রশংসনীয়।
সেমিনারে চারটি প্রবন্ধ পাঠ করেন একেএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, রিড কনসালটিং বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিলিপ প্রক্টোর ও প্রধান প্রকৌশলী অলস্টিয়ার কুইরি এবং বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউএফটি) সহ-উপাচার্য আইয়ূব নবী খান। সমাপনী বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সহসভাপতি ফারুক হাসান। উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির ও ফেরদৌস পারভেজ।