পরিবেশদূষণ ঠেকাতে নষ্ট মুঠোফোন ফেরত নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ)। সংগঠনটি বলছে, একটি মুঠোফোন ফেরত দেওয়ার বিপরীতে তারা গ্রাহককে কিছু অর্থ দিতে চায়, যাতে মানুষ যেখানে-সেখানে নষ্ট মুঠোফোন না ফেলে। এ জন্য সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশ টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এ গোলটেবিল বৈঠকে বিএমপিআইএর সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব এ উদ্যোগের কথা জানান। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত এ গোলটেবিল বৈঠকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসির চেয়ারম্যান জহুরুল হকসহ সংশ্লিষ্ট খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশে প্রতিবছর নষ্ট মুঠোফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, গৃহস্থালি ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, মোবাইল ফোনের টাওয়ার ইত্যাদি নানা বর্জ্য উৎপাদনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এসব বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলার কারণে তাতে থাকা নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক ও অন্যান্য উপাদান পরিবেশকে দূষিত করছে। শেষ পর্যন্ত এসবের প্রভাব পড়ছে মানুষের স্বাস্থ্যে।
ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা পরামর্শ শুনে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, এটি একটি ভালো ব্যবসার ক্ষেত্র হতে পারে। সবচেয়ে ভালো কাজ হবে এটিকে একটি ব্যবসা হিসেবে দাঁড় করানো গেলে। পুরোনো মুঠোফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম রিসাইক্লিং বা পুনরুৎপাদনের জন্য শিল্পমালিকেরা কিনে নিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা সংগ্রহের একটি ব্যবস্থা তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, একটি নষ্ট মুঠোফোন যদি ১০০ টাকায় বিক্রি করা যায়, তাহলে সেটি ৫০ টাকায় কেউ কিনতে পারে।
টিআরএনবির সভাপতি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে। তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবে দেশে ২০১৮ সালে চার লাখ টন ই-বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছে, যা ২০২৫ সালে ১২ লাখ টন ছাড়াবে। ফেলে দেওয়া মুঠোফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ইত্যাদি থেকে সিসা, পারদ, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি ক্ষতিকর পদার্থ মাটিতে মিশছে।
মুঠোফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় বাসাবাড়িতে মানুষকে ময়লা ফেলার জন্য দুটি ঝুড়ি রাখতে হয়। একটি রিসাইকেল করা যায়, এমন বর্জ্য রাখার ঝুড়ি; অন্যটি সাধারণ বর্জ্যের ঝুড়ি। ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম থেকে উৎপাদিত বর্জ্য মায়েদের বুকের দুধের মাধ্যমে শিশুর ক্ষতি করতে পারে। এটি সবাইকে বোঝাতে হবে।