করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় সোয়া দুই মাস বন্ধ থাকার পরে বিশ্বের বৃহত্তম শেয়ারবাজার নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের (এনওয়াইএসই) ট্রেডিং ফ্লোর আবার খুলেছে। এতোদিন অনলাইনে লেনদেন হয়েছে। ট্রেডিং ফ্লোরগুলো আংশিকভাবে খোলার প্রথমদিন গতকাল মঙ্গলবার সূচকগুলো বেড়েছে।
এর মধ্যে ডাউ জোন্স শিল্প সূচক ৫৩০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ২৪ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে উঠেছে। স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওর (এসঅ্যান্ডপি) ৫০০ সূচক ১ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৯৯১ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। নাসড্যাক সমন্বিত সূচক দশমিক ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৯ হাজার ৩৪০ পয়েন্ট ছুঁয়েছে।
স্টক এক্সচেঞ্জটি খুললেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়ে বেশ জোর দেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পরিস্থিতিতে গত ২৩ মার্চ নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে ট্রেডিং ফ্লোর বন্ধ করা হয়। ঐতিহ্য অনুযায়ী নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো বেল বাজিয়ে লেনদেন উদ্বোধন করেন।
প্রতিষ্ঠার ২২৮ বছরের মধ্যে নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে অস্বাভাবিক কোনো কারণে এ পর্যন্ত মোট তিনবার লেনদেন বন্ধ করা হয়। প্রথমবার লেনদেন বন্ধ ঘোষণা করা হয় ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইনটাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার কারণে। দ্বিতীয়বার ২০১২ সালে ঘুর্ণিঝড় স্যান্ডি আঘাত হানার পরিস্থিতিতে লেনদেন বন্ধ করা হয়। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধনের হিসাবের ভিত্তিতে এটি বিশ্বের বৃহত্তম শেয়ারবাজার।
আগের দিন সোমবার নোভাভ্যাক্স আগামী জুলাই নাগাদ করোনাভাইরাস প্রতিরোধের টিকা বাজারে নিয়ে আসার ঘোষণা দেওয়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দিনদিন জোরদার হওয়ায় নিউইয়র্কের ওয়ালস্ট্রিটের শেয়ারবাজারে আশাবাদের সঞ্চার হয়। এর বদৌলতে শেয়ারের দাম বাড়ে এবং সূচকগুলো ঊর্ধ্বগামী হয়ে ওঠে। নিউজার্সির গভর্নর ফিল মার্ফি জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে পেশাদার ক্রীড়া দলগুলো অনুশীলন ও প্রতিযোগিতায় নামতে পারবে।
তবে কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার দর বেশ বেড়েছে। এর মধ্যে কার্নিভালের শেয়ারদর ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ, এমজিএম রিসর্টস ১১ শতাংশ, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ১৬ দশমিক ২৬ শতাংশ, সাউথওয়েস্ট ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ ও নোভাভ্যাক্স ৪ দশমকি ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক খাতের শেয়ারের মধ্যে জেপি মরগ্যান চেজ ও সিটিগ্রুপের শেয়ারদর ৭ শতাংশ করে এবং ওয়েল ফার্গো ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এনওয়াইএসই ট্রেডিং ফ্লোর খোলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় বলেন, 'যত শিগগির সম্ভব রাজ্যগুলো খুলে যাবে। বিশাল কর্মযজ্ঞের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। তাতে উত্থান–পতন থাকবে। তবে আগামী বছরই হবে সেরা বছরগুলোর একটি।'
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যে লকডাউন শিথিল হয়ে আসছে। রাজ্যগুলোর মধ্যে নিউইয়র্কে অন্তত দুই লাখ মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ২০ হাজার জন মারা যান।সূত্র: সিএনবিসি, বিবিসি, আলজাজিরা।