তেল ও গ্যাসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জ্বালানির ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যবস্থা নিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার বাইডেন জানিয়েছেন, তেল ও গ্যাসের দাম আমেরিকার আমজনতার সাধ্যের মধ্যে রাখতে দেশের পেট্রোলিয়াম ভান্ডার থেকে পাঁচ কোটি ব্যারেল তেল ছাড়া হবে।
এ ঘোষণার জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানির দাম কমবে বলে মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি এতে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির দামেও প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে তেলের দাম কবে কমবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
মঙ্গলবার টুইটারে বাইডেন লিখেছেন, ‘আমেরিকান পরিবারদের জন্য তেল ও গ্যাসের দাম কমাতে এ পদক্ষেপের কথা আজ ঘোষণা করছি। আমেরিকাবাসীর জন্য কৌশলগত মজুত থেকে পাঁচ কোটি ব্যারেল তেল ছাড়বে জ্বালানি মন্ত্রণালয়, যাতে তেল ও গ্যাসের দাম কমানো যায়।’
বাইডেনের এ সিদ্ধান্তে আমেরিকার সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত সাত বছরের মধ্যে আমেরিকায় তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ। আমেরিকান অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, সোমবার ১ গ্যালন তেলের দাম ৩ দশমিক ৪০৯ ডলার ছুঁয়েছে। অথচ বছরখানেক আগেও এর দাম ছিল প্রতি গ্যালন ২ দশমিক ১১ ডলার। বাইডেনের এ ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ‘তেলের দাম কমাতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বাইডেনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিনিয়োগকারীদের পরামর্শদাতা সংস্থা এগেন ক্যাপিটালের কর্ণধার জন কিলডাফের মতে, ‘তেলের দাম কমাতে এটি অত্যন্ত সময়োচিত পদক্ষেপ। শীতকালের আগে উৎপাদনের ঘাটতি মেটাতে অতিরিক্ত তেলের এই জোগান সহায়ক হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি জাপান, চীন ও ভারতের মতো বড় দেশগুলো বাজারে অতিরিক্ত তেলের জোগান দেবে বলে জানা গেছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই সময় তেলের দাম কমাতে এককাট্টা হয়েছে সবাই।
আমেরিকায় তেলের দাম নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও বাংলাদেশে কবে সে সুদিন আসবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গত অক্টোবরে বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে সরকার জ্বালানি তেলের দাম একলাফে ২৩ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে পরিবহনভাড়া বাড়ে ২৭ শতাংশ। এ নিয়ে দেশে আন্দোলন চলছে। তবে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও বাংলাদেশ এখন কী করে, তাই দেখার বিষয়।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইতিমধ্যে বাজারে পণ্যের দাম অনেকটাই বেড়ে গেছে। এতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যাহত হবে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।