শেয়ারবাজার নিয়ে গুজব রটনাকারী ‘ডিসিশন মেকার’ গ্রুপটির ফেসবুক পেজ বন্ধের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) অনুরোধ জানিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত বৃহস্পতিবার গ্রুপটির ফেসবুক পেজটি বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে বিএসইসি এ চিঠি পাঠায়। অর্থাৎ ফেসবুক থেকে গ্রুপটিকে বিলুপ্ত করতে চায় বিএসইসি।
‘ডিসিশন মেকার’ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিএসইসি। সেগুলোর বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মুখপাত্র, বিএসইসি
জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিটিআরসিকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। রেজাউল করিম বলেন,‘ডিসিশন মেকার’ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিএসইসি। সেগুলোর বিরুদ্ধেও একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ‘ডিসিশন মেকার’ নামের ফেসবুক গ্রুপটির সদস্যসংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। এ গ্রুপ থেকে শেয়ারবাজার ও তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করা হয়, যা সিকিউরিটিজ আইনে অপরাধ। গ্রুপটি থেকে গুজব ছড়ানোর বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে বিএসইসি। বেনামে বিএসইসির একাধিক কর্মকর্তা ওই গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এসব তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেন। তার ভিত্তিতে পেজটি বন্ধের উদ্যোগ নেয়। এমনকি গ্রুপটির অ্যাডমিনদের সম্পর্কে নানা তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে বিএসইসি।
এদিকে ‘ডিসিশন মেকার গ্রুপের’ ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গ্রুপটি সম্পর্কে বলা আছে, ‘আমরা অ্যানালাইসিস–নির্ভর বাংলাদেশ শেয়ার মার্কেট পরামর্শক।’ গ্রুপটির কাজের ধরন সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে—‘মার্কেট রিসার্চ, ম্যাথমেটিক্যাল ক্যালকুলেশন, ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিস ও টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস।’ গ্রুপটির ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে, এটি ২০১৭ সালে তৈরি।
সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, বিএসইসির সনদ ছাড়া শেয়ারবাজার নিয়ে কোনো মাধ্যমে কারও কোনো পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ নেই। এটি বেআইনি ও শাস্তিমূলক অপরাধ। ২ সেপ্টেম্বর বিএসইসি এ–সংক্রান্ত একটি আদেশও জারি করে। সেখানে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য বা অন্য কোনো বিষয়ে পূর্বানুমান কিংবা বিনিয়োগকারীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে, এমন কোনো মন্তব্য করা থেকে সবাইকে বিরত থাকার আদেশ দেওয়া হয়। এমনকি আদেশটি অমান্য করলে অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন–২০১৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ আদেশ জারির ২২ দিনের মাথায় এসে ফেসবুকের ‘ডিসিশন মেকার’ পেজটি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে বিএসইসি।