বৈদেশিক মুদ্রাবাজার

ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণের দাবি ব্যবসায়ীদের

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই বিশ্ববাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের দাম ছিল বাড়তির দিকে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুটোরই দাম বৃদ্ধির নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এর সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্যবৃদ্ধি। তাতে নিত্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানির খরচ বেড়ে যাচ্ছে, যার প্রভাব পড়বে দেশীয় বাজারের ভোক্তাদের ওপর। এ পরিস্থিতি বড় সংকটে রূপ নেওয়ার আগেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আমদানি খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দরে ডলার মিলছে না। দেশের বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংক ও খোলাবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দরের চেয়ে দুই থেকে চার টাকা বেশিতে এখন ডলার লেনদেন হচ্ছে।

এ সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে ডলারের সরবরাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও শুধু ডলারের মূল্যের পার্থক্যের কারণে প্রতি কেজি পণ্যের দাম দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে যাচ্ছে। এতে আমদানিকারক ও ভোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

ডলারের মূল্য বাড়লে পণ্যের দাম কীভাবে বাড়ে তার উদাহরণ দেওয়া যাক। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি হচ্ছে ১ হাজার ৪৮০ ডলারে। সেই হিসাবে প্রতি লিটার তেলে খরচ পড়ছে ১ দশমিক ৩৫ ডলার। প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য দুই–চার টাকা বেশি দরে পরিশোধ করতে হলে প্রতি লিটারে খরচ বাড়বে প্রায় পাঁচ টাকা।

ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়ায় পণ্য আমদানিতে যে খরচ বাড়ছে, তা শুরুতে ব্যবসায়ীরাই দিচ্ছেন। তবে ওই কাঁচামাল থেকে পণ্য তৈরি করে যখন দেশের বাজারে ছাড়া হবে, তখন মোট খরচ ধরে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করবেন ব্যবসায়ীরা। তার মানে, ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধি বাবদ যে বাড়তি খরচ হচ্ছে, তা কিন্তু ভোক্তার কাছ থেকেই তুলে নেবেন ব্যবসায়ীরা। অর্থাৎ দিন শেষে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির চাপ গিয়ে পড়বে সাধারণ মানুষের ওপর।

জানতে চাইলে প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বলেন, ডলারের বিনিময় মূল্য এমন সময়ে বাড়ছে, যখন বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম চড়া। অর্থাৎ মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে চাপে পড়বেন সাধারণ ভোক্তারা। ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়ানো বা সমন্বয় করতে হলে ধীরে ধীরে করা উচিত ছিল।