কর আদায় নয়, বকেয়া পরিশোধ—এই স্লোগান নিয়ে বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে হালখাতা করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পয়লা বৈশাখের আগের দিন এনবিআর এবার আনুষ্ঠানিকভাবে চৈত্রসংক্রান্তিও করবে।
এনবিআর কার্যালয়ে আজ বুধবার অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক্-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান এসব কথা বলেন।
প্রাক্-বাজেট আলোচনায় এনবিআর সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, পারভেজ ইকবাল ও লুৎফর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমানসহ অন্য সদস্যরা।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘নববর্ষে আমরা হালখাতা করব। কর আদায় নয়, সম্মানজনকভাবে বকেয়া কর পরিশোধের সুযোগ দেব ব্যবসায়ীদের। দেশের সব আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) কমিশনারদের কার্যালয়ে হালখাতা চলবে বৈশাখ মাসজুড়েই।’
ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (ই-টিআইএন) বর্তমানে ২৮ লাখে উন্নীত হয়েছে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, মানুষ এখন কর দিতে আগ্রহী এবং সারা দেশে রাজস্ব সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
আগামী বাজেট উপলক্ষে ইআরএফের সদস্যরা এনবিআরকে কিছু পরামর্শ দেন। এর মধ্যে রয়েছে যোগ্য করদাতা চিহ্নিত করা, অর্থ পাচার ঠেকানো, কর ফাঁকি ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ, প্রণোদনার পাশাপাশি জরিমানার ব্যবস্থা রাখা, পুঁজিবাজারকে রাজস্ব আয়ের অন্যতম খাত ভাবা, আয়কর ফরম সহজ করা, নতুন মূসক আইন বাস্তবায়নের প্রভাব মূল্যায়ন করা।
ইআরএফ সদস্যরা বলেন, দেশ থেকে অর্থ পাচার বেড়ে গেছে। যারা অর্থ পাচার করছে, দেশের মাটিতে তারা কতটা কর দিচ্ছে, এনবিআর তা খুঁজে বের করতে পারে। অর্থ পাচার অব্যাহত থাকলে যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, কর আদায় বাড়বে না।
এনবিআর চেয়ারম্যান সব প্রশ্ন ও বিষয় প্রসঙ্গে কথা বলেননি। তবে তিনি বলেন, এনবিআর এখন বিভিন্ন উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে কাজ করছে। এনবিআরের ওয়েবসাইট, ফেসবুক, টুইটার দেখলেই বোঝা যাবে এনবিআরের পরিধি এখন কত বিস্তৃত। এনবিআরের এখনকার লক্ষ্য হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে অংশীদারত্ব গড়ে তোলা। আশাব্যঞ্জক যে তরুণ প্রজন্ম ‘ভ্যাট চেকার’ নামে মূসক ফাঁকি রোধের অ্যাপস তৈরি করেছে।
ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে এনবিআর এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত গেছে বলেও জানান নজিবুর রহমান।