সরবরাহ বাড়াতে ও বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে আগামী চার মাসের জন্য চালের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে সরকার। চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রকমূলক শুল্ক ২৫ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে চাল আমদানিতে মোট করভার ৬২ শতাংশ থেকে কমে ২৫ শতাংশে নামল।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। নতুন শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকবে। এ শুল্ক ছাড়ের অনুমোদন পেতে আমদানিকারককে অবশ্যই খাদ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি নিতে হবে—এ শর্ত জুড়ে দিয়েছে এনবিআর। চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এনবিআর শুল্ক কমিয়েছে বলে জানিয়েছে।
গত বছরের শেষ ভাগ থেকে জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। এরপর চলতি বছরের মে মাসে হঠাৎ বেড়ে যায় সয়াবিনসহ ভোজ্যতেলের দাম। আশা করা হয়েছিল, বোরো মৌসুমে চালের দাম কম হবে। তবে বোরো মৌসুমের চাল বাজারে আসা শুরু করতেই দেশের প্রধান এই খাদ্যশস্যের দাম বাড়তে শুরু করে। ঢাকা, কুষ্টিয়া ও নওগাঁর পাইকারি বাজারে চালের দাম ধরনভেদে কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে খুচরা বাজারেও।
এবার বোরো মৌসুমের শুরুতে হাওরে আগাম পানি এসে কিছু ধান নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে সারা দেশে ব্যাপক বৃষ্টি পাকা ধানের ক্ষতি করেছে। ওদিকে রাশিয়া, ইউক্রেন ও ভারত থেকে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গমের দাম বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের বাজারেও। বিশ্ববাজারে চালের দামও কিছুটা বাড়তি।
গত রোববার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মে মাসের সার্বিক মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, হঠাৎ মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ পেরিয়ে গেছে। গত মে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। গত এপ্রিলে এ হার ছিল ৬ দশমিক ২৯। এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতির এত বড় উল্লম্ফন গত কয়েক বছরে দেখা যায়নি।