বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষণা দিয়েছিল আজ মঙ্গলবার থেকে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশসহ চার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তলেনদেন সুবিধা চালু হবে। একইভাবে ব্যাংকের সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের লেনদেন করা যাবে। তবে কারিগরি কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত চালু হয়নি সেবাটি।
ঠিক কবে নাগাদ চালু হবে, তা–ও সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) মাধ্যমে নতুন এ সেবা চালুর কথা ছিল।
বর্তমানে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা লেনদেন করা যায়। তবে এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো লেনদেন করা যায় না। এর ফলে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় গ্রাহকদের। অবশেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশের (এনপিএসবি) মাধ্যমে সেই নতুন সেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বিকাশের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে নতুন এই সেবা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তে সেবাটি চালু হয়নি। আমরা পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।’
জানা গেছে, আজ থেকে এমএফএসের প্রতিষ্ঠান বিকাশ, ইসলামী ব্যাংকের এমক্যাশ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ইউক্যাশ ও আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ইসলামিক ওয়ালেট থেকে গ্রাহকেরা একে অপরের সঙ্গে লেনদেন চালুর কথা ছিল। এটা চালু হলে কোনো গ্রাহক চাইলে তাঁর বিকাশ হিসাব থেকে সহজেই এমক্যাশে টাকা পাঠাতে পারবেন।
এমএফএসের গ্রাহকেরা নিজেদের মধ্যে লেনদেনের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ও পূবালী ব্যাংক থেকে এমএফএস প্রতিষ্ঠানে টাকা লেনদেন করতে পারতেন। অর্থাৎ এ চার ব্যাংকের কোনো গ্রাহক চাইলে তাঁদের ব্যাংক হিসাব থেকে আপাতত বিকাশসহ চারটি এমএফএস প্রতিষ্ঠানের হিসাবে টাকা পাঠাতে পারতেন। এমএফএস থেকেও এসব ব্যাংকে টাকা পাঠাতে পারবেন।
কারিগরি কার্যক্রম সম্পন্ন হলেই সেবাটি চালু হবে। তবে ঠিক কবে হবে, তা বলা যাচ্ছে না।সিরাজুল ইসলাম, মুখপাত্র, বাংলাদেশ ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কারিগরি কার্যক্রম সম্পন্ন হলেই সেবাটি চালু হবে। তবে ঠিক কবে হবে, তা বলা যাচ্ছে না।
এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এই সেবার জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো মাশুল নেওয়া যাবে না। ব্যাংক ও এমএফএসগুলো কীভাবে মাশুল ভাগাভাগি করবে, সেটি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে এমএফএস প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে অর্থ এমএফএস প্রতিষ্ঠানের হিসাবে যাবে, সেই প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রেরণকারী এমএফএস প্রতিষ্ঠানকে লেনদেন হওয়া অর্থের দশমিক ৮০ শতাংশ হারে মাশুল দেবে। অর্থাৎ বিকাশ থেকে এমক্যাশে টাকা গেলে, এমক্যাশ প্রতি হাজারের জন্য বিকাশকে ৮ টাকা প্রদান করবে।
একইভাবে ব্যাংক হিসাব থেকে এমএফএস হিসাবে এবং এমএফএস হিসাব থেকে ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের উভয় ক্ষেত্রেই এমএফএস প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে লেনদেন করা অর্থের দশমিক ৪৫ শতাংশ মাশুল প্রদান করবে। অর্থাৎ পূবালী ব্যাংক থেকে বিকাশে ১ হাজার টাকা জমা হলে পূবালী ব্যাংককে ৪ টাকা ৫০ পয়সা দেবে বিকাশ। বিকাশ থেকে পূবালী ব্যাংকে অর্থ গেলেও একই হারে মাশুল ভাগাভাগি করতে হবে বিকাশকে।