বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ ধনী ওয়ারেন বাফেট এখন বাসায় বসেই অফিস করছেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তিনি তাঁর দৈনন্দিন জীবনের রুটিন পাল্টে ফেলেছেন। সাধারণত তিনি ঘুম থেকে ওঠেন ৬টা ৪৫ মিনিটে। তারপর তিনি নিয়ম করে দৈনিক পত্রিকা পড়েন। এমনিতেই তিনি তাঁর কাজের মধ্যে ৮০ শতাংশই বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে কাটান। গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতেও তিনি নানা ধরনের বই বা জার্নাল পড়েন।
তবে তাঁর একটি প্রিয় পানীয় আছে। আর সেটি হলো কোকা–কোলা। এমনিতেই তিনি কোকা–কোলা কোম্পানির একজন বড় শেয়ারধারী। ১৯৮৮ সালে তিনি কোকা–কোলার ১০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থের শেয়ার কিনেছিলেন। ওয়ারেন বাফেট এক সাক্ষাৎকারে খানিকটা ঠাট্টাচ্ছলেই জানালেন, ঘরে বসে কাজ করার পাশাপাশি তিনি আগের তুলনায় বেশি করে কোকা–কোলা পান করছেন। এটি ছাড়া জীবনের সবকিছুই প্রায় বাদ দিতে হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে ইয়াহু ফাইন্যান্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এখন ৮৯-এ। দুজন ভিন্ন ভিন্ন ডাক্তার মাত্রই বলে গেলেন যে আমি গত কয়েক বছর আগেও যেমন ছিলাম, এখন সে তুলনায় ভালো আছি।’
ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে অবশ্য ওয়ারেন বাফেটের জন্য সময়টা অবশ্য ভালো যাচ্ছে না। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ছে। কমছে শেয়ারের দর। ফলে বলা যায়, সবার অবস্থাই আসলে একই রকম। বাফেট বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বার্তা সংস্থা সিএনবিসি জানাচ্ছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে এখন পর্যন্ত বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের ক্ষতি হচ্ছে ৭০ বিলিয়ন ডলার। কেননা, গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ সার্চ পর্যন্ত সময়ে অ্যাপল ও ব্যাংক অব আমেরিকার মতো ব্লু-চিপ শেয়ারের দর কমেছে ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে অ্যাপলের শেয়ারে লোকসান ১৯ বিলিয়ন ডলার এবং ব্যাংক অব আমেরিকায় লোকসান ১৪ বিলিয়ন ডলার। তবে সবচেয়ে বেশি কমেছে ডেলটা এয়ারের শেয়ারের দর, ৬০ শতাংশ।
বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন হচ্ছে শেয়ারধারীদের বার্ষিক সভা। এ সময় ওয়ারেন বাফেট একটি নীতিনির্ধারণী বক্তৃতা দেন। সবাই অপেক্ষায় থাকেন দিনটির জন্য। আগামী ২ মে এই সভা হওয়ার কথা ছিল। তবে ওয়ারেন বাফেট সভায় জনসমাগম বাতিল করেছেন। অনলাইনে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১৩ মার্চ সবার উদ্দেশে একটি চিঠি লিখে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।