গরিব মানুষের ক্রয়ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হবে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

পিছিয়ে পড়া গরিব মানুষের ক্রয়ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হবে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম এত বেড়ে গেছে যে পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। সে জন্য তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি আয়ও বাড়াতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর কোভিডের প্রভাব নিয়ে এক পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) নিয়ে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়।

পিছিয়ে পড়া মানুষের আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখতে নয়টি পরামর্শ দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এগুলো হলো টাকার মান স্থিতিশীল রাখা, সুদের হার সমন্বয় করা, নিত্যপণ্যের শুল্ক-কর কমানো, নতুন কর্মসংস্থানে করপোরেট কর হ্রাস, দাম নিয়ন্ত্রণে টিসিবির কর্মসূচি বিস্তৃত করা, বিদ্যুৎ জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মতো ভর্তুকির খাতগুলো পুনর্বিন্যাস করা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বিস্তৃত করা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) টাকা খরচে সাশ্রয়ী হওয়া এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে এসডিজির সূচকগুলো কী অবস্থায় আছে, তা জানার মতো পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব আছে। এখন আর তথ্যের ঘাটতি নয়, বরং তথ্যের অন্ধত্ব তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। সামনে নির্বাচন, তাই মূল্যস্ফীতির ইস্যু রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।

মূল প্রবন্ধে কোভিড মহামারি পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনে কোথায় কতটা প্রভাব ফেলেছে, তা তুলে ধরেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এসডিজির সূচকগুলোকে কাঠামো হিসেবে বিবেচনা করে উন্নয়ন পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেন তিনি।

‘বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে অতিমারি কী প্রভাব ফেলবে?’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের সমন্বয়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। তিনি বলেন, কোভিডকে বড় সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে। এই সুযোগে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের সংস্কার করা উচিত। তবে সে জন্য পথনকশা তৈরি করা দরকার।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ক আনিসাতুল ফাতেমা ইউসুফ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজঅ্যাবিলিটির (সিএসআইডি) নির্বাহী পরিচালক জহুরুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুমানা হক, গণসাক্ষরতা অভিযানের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান, হরিজন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজু বাশফোর প্রমুখ।