আর্থিক লেনদেনে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। বড় ধরনের কেনাকাটায় সঙ্গে থাকা ক্রেডিট কার্ডটি বেশ কাজে আসে। তবে অনেকের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড নিয়ে একধরনের ভীতি কাজ করে। তারা ভাবে, এটা শেষে ব্যয়ের ফাঁদই হয়ে দাঁড়ায় কি না! ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে এখানে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
দ্রুত লেনদেন
ধরুন, বেশ দামি কোনো জিনিস কিনতে চাইছেন। একসঙ্গে এত টাকা জোগাড় করতে পারছেন না। কারও কাছে ধারও করতে পারছেন না। এসব ক্ষেত্রে সবচেয়ে কাজে দেয় ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার। এর মাধ্যমে পণ্যটি চট করে কিনে কয়েক মাস ধরে মূল্য পরিশোধ করা যায়। এতে ঋণের বোঝা খুব বেশি মনে হয় না। এ ক্ষেত্রেও নিজের বিচার-বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে হবে। সময়সীমা অনুযায়ী মূল্য পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে হয়তো জরিমানা গুনতে হতে পারে।
সুরক্ষা
বলা হয় নগদ, ডেবিট কার্ড ও চেক ব্যবহারের চেয়ে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেশি নিরাপদ। আপনার কার্ডটির ভুলত্রুটি বা জালিয়াতি হলে কিংবা চুরি হলে আপনি আপনার অর্থ ফেরত পাবেন।
ধরুন, আপনার কার্ডটি চুরি হয়ে গেল। কেউ টাকা তুলে নিল। এসব ক্ষেত্রে অভিযোগ করলে কার্ড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান পুরো অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকে। যথাযথ প্রমাণ দিয়ে দ্রুত অর্থ ফেরত পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে একটি ছোট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কার্ডের পিন নম্বরটি মনে রাখতে হবে। নম্বরটি লিখে নিজের কাছে কখনো রাখা যাবে না।
ঋণের সুবিধা
কিছু ক্রেডিট কার্ড, বিশেষ করে বিদেশে শূন্য শতাংশ সুদে ঋণ দেয়। এসব ক্ষেত্রে মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করতে হয়, যা বেশ সুবিধাজনক। আবার কোনো কোন কার্ডে ঋণে সুদের হার অনেক থাকে। এ ক্ষেত্রেও একটা সুবিধা আছে। বোঝা এড়াতে দ্রুত ঋণ পরিশোধ করা হয়। নিজস্ব ঋণ থাকে না।
ব্যয়ের সঙ্গে আয়
ক্রেডিট কার্ডে বিভিন্ন অফার দেওয়া হয়। যেমন: ‘ক্যাশ ব্যাক অফার’, ‘স্পেশাল ডিসকাউন্ট’। দেশের বাইরে বেড়াতে গেলে, হোটেলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে অনেক সময়ই মূল্যছাড় দেওয়া হয়। প্লেনের টিকিট কাটতেও অনেক সময় পাওয়া যায় বিশেষ মূল্যছাড়।
পরিবর্তনযোগ্য
ধরুন, আপনি একটি অফারের ক্রেডিট কার্ড নিয়েছেন। কার্ডটি ব্যবহারে ঋণের বোঝা বেশি মনে হলে এটি পরিবর্তন করে অন্য অফারের কার্ড নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে হয়তো সামান্য অর্থ বেশি লাগতে পারে। তবে তা লাভজনকই হয়।
ঋণের ফাঁদ
ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সব সময়ই একটি ঋণ নেওয়ার মাধ্যম। আপনি এখন কিনছেন, পরে অর্থ পরিশোধ করতেই হবে। একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। আপনি সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করলে ঋণ বাড়তেই থাকবে।
লুক্কায়িত ব্যয়
সুদের হার পরিশোধই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের একমাত্র ব্যয় নয়। সময়মতো মাসিক মূল্য পরিশোধ না করলে আপনাকে জরিমানা গুনতে হতে পারে। ক্রেডিটে যে ব্যবহারের সীমা থাকে, সেটা অতিক্রম করলেও একটা নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ, সময়জ্ঞান না থাকলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেশ বিপজ্জনক। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে নগদ অর্থ তুলতে এর জন্য নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হতে পারে।
সঠিক কার্ডটি চেনা
সঠিক কার্ডটি বেছে নেওয়া জরুরি। আপনার জন্য যা সুবিধাজনক। একটি ভুল কার্ড দিনের পর দিন ব্যবহার করলে ঋণের বোঝা কেবল বাড়তেই থাকবে। তবে এটা বুঝতে পুরো শর্তাবলি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। কোনটা নিজের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা বেছে নিতে হবে।
সূত্র : মানি সুপারমার্কেট ডট কম।