সময় ও সুযোগ পেলে চার মাসের মধ্যেই সব জটিলতা গুছিয়ে তোলা সম্ভব বলে দাবি করেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল। আজ বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে ভেরিফায়েড ফেসবুক ঠিকানা (ইভ্যালি ডটকম বিডি) থেকে একটি পোস্টের মাধ্যমে ইভ্যালি এ কথা বলেছে। আইনজীবীর মাধ্যমে ইভ্যালির এমডির কাছ থেকে বক্তব্যটি পাওয়া গেছে বলে ফেসবুক পোস্টে বলা হয়।
গ্রাহকদের ‘সম্মানিত’ সম্বোধন করে তাঁদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনারা সবাই অবগত। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অংশীদার হয়ে দেশের অনলাইন কেনাকাটাকে সবার হাতের মুঠোয় নিয়ে যেতে আমরা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি। এই কাজকে আমরা এগিয়ে নিতে চাই। সবার সহযোগিতায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। এই সুযোগ পেলে সবার সব ধরনের অর্ডার ডেলিভারি দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলাম, আছি এবং থাকব।’
ইভ্যালির কর্মচারীরা বর্তমান পরিস্থিতিতে অজ্ঞাতনামা হিসেবে শঙ্কার মধ্যে দিন পার করছেন বলে ইভ্যালির পক্ষ থেকে বলা হয়। উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের সম্মানিত সিইও এবং চেয়ারম্যান কারাগারে থাকায় আমাদের ব্যাংকিংও সাময়িকভাবে বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সার্ভারসহ, অফিসের খরচ চালানো এবং আমাদের কর্মচারীদের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়গুলোতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’
ইভ্যালির সার্ভার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয়, দ্রুত সার্ভার চালু করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ইভ্যালি বলেছে, ‘গ্রাহক ও সেলারদের স্বার্থ সুরক্ষায় ইভ্যালি সর্বোচ্চ সচেষ্ট। দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিত হতে গ্রাহকদের সব সময় পাশে পেয়েছে ইভ্যালি। এই ভালোবাসায় আমরা চিরকৃতজ্ঞ। সামনের দিনগুলোতেও এভাবে আপনাদের পাশে চাই। আপনাদের ভালোবাসার শক্তি আমাদের অদম্য পথচলার প্রেরণা। ইভ্যালির পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।’
পোস্ট দেওয়ার পর এক ঘণ্টায় ইভ্যালির পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য পড়েছে ৭৯৮টি। যেমন মো. তালহা হোসাইন বলেছেন, ‘মুখে মধু নিয়ে পাবলিকের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিলেন। কিন্তু এখনো এই মধু অবিরাম।’
ইমরান হাসান প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘মানে দুই মাস সার্ভার মেইনটেইন করার টাকাও আপনাদের কাছে নাই?’ আরাফাত হোসেন বলেছেন, ‘রাসেল আসলে জেলখানায়, নাকি হাসপাতালে?’ কামরুল হাসান বলেছেন, ‘ওরা মাসুদকে ভালো হতে দিল না।’ মোহাম্মদ রাসেদ বলেছেন, ‘শুভকামনা ভবিষ্যতের জন্য।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ইভ্যালির হিসাব অনুযায়ী কোম্পানিটির ৫৪৪ কোটি টাকার দায় রয়েছে। দায়ের বিপরীতে তাদের চলতি সম্পদ রয়েছে ৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর সম্পত্তি, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি মিলিয়ে রয়েছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এ দুইয়ের যোগফল মোট ১০৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এগুলো হচ্ছে স্থাবর সম্পত্তি।
মোট দায় ৫৪৪ কোটি টাকা থেকে এই অঙ্ক বাদ দিলে বাকি থাকে ৪৩৯ কোটি টাকা, যাকে ইভ্যালি বলছে তার অস্থাবর সম্পত্তি।
বিবরণী মেলাতে ইভ্যালি দেখিয়েছে, অস্থাবর সম্পত্তি ৪৩৮ কোটি টাকার মধ্যে ৪২৩ কোটি টাকা হচ্ছে তার ব্র্যান্ড মূল্য, আর ১৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা হচ্ছে অদৃশ্যমান সম্পত্তি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে।