করোনাকালে দেশের সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে ৯২ ভাগের আয় কমে গেছে। তাদের মধ্যে পাঁচ লাখ মানুষ নতুন দরিদ্র হয়ে পড়েছে। বেসরকারি সংগঠন ইনডিজিনাস পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেসের (আইপিডিএস) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার এক ভার্চ্যুয়াল সভায় এ গবেষণার তথ্য তুলে ধরা হয়। সভায় মূল বক্তব্য তুলে ধরেন আইপিডিএসের সভাপতি সঞ্জীব দ্রং।
বাংলাদেশে বসবাসরত ৫০টির বেশি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে প্রায় ৩৫টির বসবাস সমতল ভূমিতে, যারা সংখ্যায় ২০ লাখের বেশি।
দেশের ২৮টি জেলার ৩৫টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ১ হাজার ২০৫টি পরিবারের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত এ গবেষণা চলে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা সংকট অতিদ্রুত ও মারাত্মক আকারে সমতলের আদিবাসীদের জীবন ও জীবিকার ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে অতিদরিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষের সংখ্যা ৬২ শতাংশের নিচে চলে যায়। সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকাংশই নিরাপত্তাহীন বা অন্যের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল চাকরির সঙ্গে যুক্ত। যেমন দিনমজুরি, বিউটি পারলার, গার্মেন্টস, গৃহপরিচারিকা, সিকিউরিটি গার্ড, ড্রাইভার, বিক্রয়কর্মী হিসেবেই বেশি কাজ করেন।
ফলে বেতনভোগীদের ৭২ শতাংশ চাকরি হারিয়েছেন কিংবা কর্মক্ষেত্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাঁরা চাকরিতে আছেন, তাঁদের মধ্যে ২০ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা আংশিক বেতন পাচ্ছেন। শুধু ৮ শতাংশ উত্তর দিয়েছেন, মহামারি তাঁদের আয়রোজগারে তেমন প্রভাব ফেলেনি।
সঞ্জীব দ্রং বলেন, ‘সরকার ৫০ লাখ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছে। এর মধ্যে সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অন্তত ৫০ হাজার মানুষ রাখার অনুরোধ আমরা করেছি।’
আজকের সভায় বক্তব্যে বেসরকারি সংগঠন নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জীবনে করোনার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। তাদের সহায়তায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন উন্নয়নকর্মী সারা মারান্ডি, উ সেন, আইপিডিএসের তুলি ম্রং ও টনি চিরান।