করোনা মহামারি শুরুর পর গত মে পর্যন্ত ১৫ মাসে মারা গেছেন দেশের ব্যাংকের ১৩৩ কর্মকর্তা-কর্মচারী। আর আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৩৯৯ জন। চলতি জুনে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ব্যাংকারদের পরিবারকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। কর্মচারী মারা গেলে দেওয়া হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা। আর ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার থেকে অফিসারের নিচের পদমর্যাদার কর্মকর্তার পরিবার পাচ্ছেন ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। লকডাউনে ব্যাংকারদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে পরিবহনের ব্যবস্থা করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বেসরকারি বেশির ভাগ ব্যাংকই তা মানছে না। আর ব্যাংক শাখাতেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। ফলে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আক্রান্তের পরিমাণও বেশি।
ব্যাংকারদের মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব ব্যাংকে গ্রাহক ভিড় যত বেশি, সেই ব্যাংকের আক্রান্তের সংখ্যাও তত বেশি। পাশাপাশি যেসব ব্যাংক করোনা প্রতিরোধে বেশি ব্যবস্থা নিয়েছে, ওই ব্যাংকের কর্মকর্তারাও নিজেদের বেশি সুরক্ষিত রাখতে পেরেছেন।
গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ২০৬ জন। আর গত মে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৩৯৯ জন। ফলে ব্যাংকের জনবলের প্রায় ১৪ শতাংশই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার ২০৬ জন। আর গত মে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৩৯৯ জন। ফলে ব্যাংকের জনবলের প্রায় ১৪ শতাংশই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহক ও ব্যাংকারদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা পরিপালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো সেটা মেনে চলার কথা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা রোধ করা সম্ভব। যাঁরা করোনায় মারা গেছেন, ব্যাংকগুলো তাঁদের পরিবারকে অনুদান দেবে।
করোনায় মারা যাওয়া ১৩৩ কর্মকর্তার মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোরই ৭৩ জন। করোনায় সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। ব্যাংকটি করোনায় ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হারিয়েছে।
জানা গেছে, গত মে মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭৬ জন ব্যাংকার। আর মারা গেছেন ২ জন। করোনায় মারা যাওয়া ১৩৩ কর্মকর্তার মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোরই ৭৩ জন। করোনায় সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। ব্যাংকটি করোনায় ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হারিয়েছে। আর আক্রান্তও বেশি হয়েছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। গত মে পর্যন্ত ব্যাংকটির ২ হাজার ৭৯৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। জনতা ব্যাংকের ১৫ কর্মকর্তা, অগ্রণী ও কৃষি ব্যাংকের ১০ জন করে কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুছ ছালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আক্রান্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খরচ বহন করছি। মারা গেলে অনুদান দেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত কারও পরিবার অনুদান পায়নি। কারণ, নথিপত্র জমা হয়নি। ইতিমধ্যে ১৬ জন কর্মকর্তা মারা গেছেন, আরও একজনের অবস্থা খারাপ। আমরা চেষ্টা করছি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেবা অব্যাহত রাখার।’
ব্যাংককর্মীদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যান সিটি ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুজতবা শাহরিয়ার (৪০)। গত বছরের ২৬ এপ্রিল মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণকরেন তিনি।
এরপরই আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছেন ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ব্যাংকটির ২ হাজার ৪০৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন ও মারা গেছেন ৬ জন। এ ছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের ৬ জন ও ইউসিবিএলের ৫ কর্মকর্তা করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। ন্যাশনাল ব্যাংকের ৭৮৫ ও ইউসিবিএলের ৬৮৪ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুধু এইচএসবিসি ব্যাংকের দুজন কর্মকর্তা করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। আর আক্রান্তের দিক দিয়ে শীর্ষে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ৪৯৯ কর্মকর্তা।
ব্যাংককর্মীদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যান সিটি ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুজতবা শাহরিয়ার (৪০)। গত বছরের ২৬ এপ্রিল মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ
করেন তিনি।
আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুধু এইচএসবিসি ব্যাংকের দুজন কর্মকর্তা করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। আর আক্রান্তের দিক দিয়ে শীর্ষে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ৪৯৯ কর্মকর্তা।
ব্যাংককর্মীদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যান সিটি ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুজতবা শাহরিয়ার (৪০)। গত বছরের ২৬ এপ্রিল মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।