বাজারে এবার ময়দার দাম কেজিতে ৮ টাকার মতো বাড়ল। খুচরা বাজারে খোলা ময়দা প্রতি কেজি ৪০ টাকায় উঠেছে, যা এত দিন ৩২ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত বলে জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
চাল ও পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি এবং লবণ-কাণ্ডের পর ময়দার দাম বাড়ার খবর এল। অবশ্য ময়দার মতো আটার দামও কেজিতে ১-২ টাকা বেড়েছে। গত কয়েক দিনে নতুন করে বেড়েছে ডিমের দাম। সবজির দাম বেশ চড়া। বেশির ভাগ সবজির কেজিই ৫০-৭০ টাকা।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবে, পাইকারি বাজারে এক মাসে ময়দার দাম কেজিপ্রতি ৬ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। এখন পাইকারিতে ময়দা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩৫-৩৭ টাকা দরে।
ঢাকার কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, দুই সপ্তাহ আগেও তাঁরা প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ময়দা ১ হাজার ৪৫০ টাকার মধ্যে পেতেন। এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা বেশি দিয়ে। কারওয়ান বাজারের হাজি মিজান স্টোরের বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, খোলা ময়দার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও প্যাকেটজাত ময়দার দাম বাড়েনি।
বাজারে প্যাকেটজাত ময়দার দাম কেজিপ্রতি ৪৩ টাকার আশপাশে।
কারওয়ান বাজার ছাড়াও মিরপুর ১ নম্বর সেকশন ও মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটেও বাড়তি দামে ময়দা বিক্রি হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে গেছে বেকারি পণ্য উৎপাদনে।
ময়দা বিপণনকারী শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা প্রথম আলোকে বলেন, সরবরাহ কম হওয়ার পাশাপাশি কানাডার গমের দামও বেড়েছে। এক মাস আগে যে গম টনপ্রতি ২৫০ ডলারে আমদানি করা যেত, সেটা এখন ২৮৫ ডলারে উঠেছে। এ ছাড়া ডলারের দামও বেড়েছে।
>ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে কানাডার গমের ঘাটতি।
কারওয়ান বাজারে দেশি পেঁয়াজের দর কেজিতে ২০ টাকা বাড়ল।
সবজির দাম চড়া, বেশির ভাগ সবজির কেজি ৫০-৭০ টাকা
ডিমের ডজনপ্রতি দাম ১০ টাকা বেড়ে ১০৫ টাকা।
লবণ কেনার হুজুগ কেটেছে, চালের বাজারে হেরফের নেই।
চট্টগ্রামের বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কানাডায় এবার নতুন মৌসুমের গম উঠতে দেরি হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশেও সরবরাহ পিছিয়েছে।
এদিকে রাজধানীতে পেঁয়াজ বিক্রি বাড়িয়েছে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এত দিন তারা ঢাকায় ৩৫টি স্থানে ট্রাকে পণ্য বিক্রি করত। এখন সেটা বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢাকার বাইরে সব বিভাগীয় শহরে ও কয়েকটি জেলায় টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকানে গতকাল প্রতি পাঁচ কেজি দেশি পেঁয়াজ ৯০০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়, এতে কেজি পড়ে ১৮০ টাকা। এ দর আগের দিনও ১৬০ টাকা ছিল বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেন, দেশি পেঁয়াজ একেবারেই শেষের পথে। এ কারণে দাম বেড়েছে। অবশ্য মিসরের পেঁয়াজের দর কেজিপ্রতি দাঁড়িয়েছে ১০৫-১১০ টাকায়। আগের দিনের চেয়ে যা ১০ টাকার মতো কম।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে মিসরের পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা ও মিয়ানমারের ভালো মানের পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা।
ঢাকার খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৮০-২০০ টাকা ও মিসরের পেঁয়াজ ১৪০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। টিসিবির হিসাবে বাজারে এখন পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত বছর এ সময়ের চেয়ে ৩৩১ শতাংশ বেশি।