এবার বেসরকারি কনটেইনার ডিপোর সেবা মাশুল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা)। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে খরচ সমন্বয় করতে মাশুল বাড়ানো হয়েছে বলে সংগঠনটি জানায়। আজ মঙ্গলবার এক ভার্চু৵য়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয় বিকডা।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পাঁচটি খাতে গড়ে ২৩ শতাংশ হারে সেবা মাশুল বাড়ানো হয়েছে। পাঁচটি খাত হলো ডিপো ও বন্দরের মধ্যে কনটেইনার পরিবহন, রপ্তানি পণ্য কনটেইনারে বোঝাই, আমদানি পণ্য কনটেইনার থেকে খালাস, কনটেইনার ওঠানো–নামানো ও ওজন মাপার মাশুল। এর মধ্যে ২০ ফুট লম্বা কনটেইনার পরিবহনের মাশুল ছিল ১ হাজার ১৫০ টাকা। এখন ২৬৫ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একই রকমের আমদানি কনটেইনার থেকে পণ্য খালাসের মাশুল ৭ হাজার ৯৩০ থেকে বাড়িয়ে ৯ হাজার ৭৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৪ নভেম্বর সরকার ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৫ টাকা দর বাড়ায়। এদিন থেকেই নতুন মাশুল কার্যকর হবে বলে সংগঠনটি জানায়। তবে ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো বা আইসিডি নীতিমালা অনুযায়ী, সেবার মাশুল বাড়াতে হলে কমিটির মাধ্যমে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হয়।
জানতে চাইলে বিকডার সভাপতি নুরূল কাইয়ূম খান প্রথম আলোকে বলেন, ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে গাড়ি ও যন্ত্রের জ্বালানি খরচ যে বেড়েছে, তা সমন্বয় করতে ‘ফুয়েল সারচার্জ’ আরোপ করা হয়েছে। সে অর্থে বাড়তি কোনো মাশুল আরোপ করা হয়নি। যে মাশুল বাড়ানো হয়েছে তা জ্বালানি বাবদ খরচ হবে ডিপো পরিচালনাকারীদের।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি–রপ্তানি হওয়া সব কনটেইনার পণ্যে এই মাশুল কার্যকর হবে না। বন্দরের পরিবর্তে যেসব আমদানি–রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারের পরিচালন কাজ ডিপোতে করা হয়, সেগুলোতে এই বর্ধিত মাশুল কার্যকর হবে। বর্তমানে রপ্তানি পণ্যের ৯০ শতাংশ ডিপোর মাধ্যমে কনটেইনারে বোঝাই হয়। আর ৩৭ ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে নামানোর পর ডিপোতে নিয়ে খালাস করতে হয়। এর পরিমাণ মোট আমদানির ২১ শতাংশ। অর্থাৎ রপ্তানিতে ৯০ শতাংশ এবং আমদানিতে ২১ শতাংশ পণ্যে এই প্রভাব পড়বে। চট্টগ্রাম বন্দরের এক থেকে ২৬ কিলোমিটারের মধ্যে ১৯টি এই কনটেইনার ডিপো এই মাশুল আদায় করবে।
কনটেইনার ডিপোর ব্যবহারকারী হিসেবে রয়েছে চারটি পক্ষ। আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, বিদেশি ক্রেতা এবং কনটেইনার মালিকপক্ষ। পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এখন পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বাড়তি দর চাপিয়ে দেওয়া হলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আমরা পিছিয়ে যাব।
রপ্তানি পণ্য বিদেশি ক্রেতার কাছে পৌঁছানোর দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী–মাশুল বাড়াতে হলে কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। কোনো আলোচনা করে মাশুল বাড়ানো অযৌক্তিক। এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হলে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, বিদেশি ক্রেতা ও ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় বাড়বে।