কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪৬ শতাংশ শুল্ক-কর আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব (এনবিআর)। এ বছরের লক্ষ্য অর্জনে বছরের বাকি মাসগুলোয় ৩৬ হাজার কোটি টাকা করে শুল্ক-কর আদায় করতে হবে। প্রতি মাসে এত রাজস্ব আদায় আগে কখনো হয়নি। গত ৭ মাসে গড়ে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা আদায় হয়েছে। এ বছর ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা আছে।
এমন অবস্থায় এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য কমানো হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে ৩ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অবশ্য এনবিআর কোনো বছরেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে না। প্রতিবছরই সংশোধন করে কমাতে হয়। শেষ পর্যন্ত সেই সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করা সম্ভব হয় না। গত অর্থবছরে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি হয়েছিল।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কা ও বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্যে অস্থিরতার কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই লক্ষ্য সংশোধন করা ছাড়া বিকল্প নেই।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) সব মিলিয়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ১২ শতাংশ। অর্থবছরের শুরুর দিকে রাজস্ব আদায়ে গতি না থাকলেও এখন বাড়ছে। জুলাই মাসে মাত্র ১৫ হাজার কোটি টাকা আদায় হয়। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ হাজার কোটি টাকা।
গত সাত মাসে সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট থেকে। এই খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৭ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। এরপর আমদানি খাতে ৪৮ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। আয়কর ও ভ্রমণ খাতে আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা।
এদিকে ভ্রমণ কর আদায় বাড়ছে। করোনা বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উড়ানের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি স্থলপথেও ভারত–ভ্রমণ বেড়েছে। ৭ মাসের হিসাবে ভ্রমণ করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫৬ শতাংশ। এই খাতে গত জুলাই-জানুয়ারি মাসে ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে ৩৪১ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে আদায় হয় ১৪১ কোটি টাকা। এ বছরের শুধু জানুয়ারি মাসে আদায় হয়েছে ৯৭ কোটি টাকা।