অর্থনীতির গেম চেঞ্জার-১৫

১০ টাকা নিয়ে ঢাকায়, তাঁর হাতেই ঘটে আসবাবশিল্পে বিপ্লব

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাফল্য এখন অর্থনীতিতে। ৫০ বছরে বাংলাদেশ নামের কথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হয়ে উঠেছে চমকে ভরা জাদুর বাক্স। সাহায্যনির্ভর বাংলাদেশ এখন বাণিজ্যনির্ভর দেশে পরিণত। তবে যাত্রাপথটা সহজ ছিল না। বড় ঝুঁকি নিয়ে অভিনব পথে এগিয়ে গেছেন আমাদের সাহসী উদ্যোক্তারা। এ সাফল্যের পেছনে আরও যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ যেমন ছিলেন, আছেন নীতিনির্ধারকেরাও। মূলত অর্থনীতির এসব অগ্রনায়ক, পথ রচয়িতা ও স্বপ্নদ্রষ্টারাই ৫০ বছরে বিশ্বে বাংলাদেশকে বসিয়েছেন মর্যাদার আসনে।
আমরা বেছে নিয়েছি সেই নায়কদের মধ্যে ৫০ জনকে। আমাদের কাছে তারাই অর্থনীতির ‘গেম চেঞ্জার’।

শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন। মাত্র ১০ টাকা নিয়ে দিনাজপুর থেকে অচেনা শহর ঢাকায় পৌঁছান। দিনের পর দিন কাটিয়ে দেন খোলা আকাশের নিচে। টাকার অভাবে অভুক্ত থেকেছেন মাঝেমধ্যে। তবুও স্বপ্নপূরণের পথে পিছপা হননি। ধীরে ধীরে জয় করেছেন সাফল্যের প্রতিটি ধাপ। তাঁর হাত ধরেই একসময় জন্ম নেয় দেশের অন্যতম সেরা আসবাব ব্র্যান্ড ‘অটবি’।

দেশের অন্যতম সেরা এই শিল্পী নিতুন কুন্ডু না–ফেরার দেশে চলে যান ২০০৬ সালে। তার আগেই শিল্পকর্মের জন্য জাতীয় পদকসহ অনেক পুরস্কার তিনি নিজের ঝুলিতে ভরেছেন। অটবি ছিল ওই সময় দেশের এক নম্বর আসবাব ব্র্যান্ড। নিজের স্বপ্নপূরণের মধ্য দিয়ে অর্থবিত্ত–খ্যাতির সবই অর্জন করেছেন তিনি। তবে শুরুটা তাঁর স্বস্তির ছিল না মোটেই। ছিল না পরিবারের সমর্থন। টাকার অভাবে লড়তে হয়েছে প্রতিনিয়ত। তাঁর হাতে গড়া অটবির সম্পদের পরিমাণ এখন ৫৩১ কোটি টাকা।

শিল্পী নিতুন কুন্ডু

আঁকাআঁকির নেশা ছিল ছেলেবেলা থেকেই। এই নেশার কারণেই মাধ্যমিক পরীক্ষার পর নিতুন কুন্ডু ঢাকায় এসে আর্ট কলেজে ভর্তি হতে চাইলেন। ঢাকায় রেখে পড়াশোনা করানোর সামর্থ্য ছিল না মা-বাবার। তাঁরা তাঁকে স্থানীয় কলেজে পড়তে বললেন। কিন্তু তিনি একাই ছুটলেন স্বপ্নপূরণের পথে। শুরুর দিকে ঢাকায় থাকার জায়গা ছিল না তাঁর। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বারান্দায় ঘুমিয়েছেন রাতের পর রাত। এরপর আর্ট কলেজে শুধু ভর্তি হননি, বের হয়েছেন সেরা ছাত্র হয়ে।
সিনেমা থেকে মুক্তিযুদ্ধের পোস্টার

১৯৫৩ সালের গোড়ায় দিকে চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য বম্বে থেকে ফিরে দিনাজপুরে মামাবাড়িতে আসেন বিখ্যাত অভিনেতা-পরিচালক সুভাষ দত্ত। শিল্পানুরাগী সুভাষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন নিতুন কুন্ডু। সুন্দর হাতের লেখার জন্য সিনেমা হলের ডেকোরেশন, ব্যানার ও সাইনবোর্ড লেখার সহকারী হিসেবে তাঁকে সঙ্গে নেন সুভাষ দত্ত। তাঁর কাজ দেখে ঢাকার এক ফিল্ম রিপ্রেজেনটেটিভ তাঁকে মাসে ১০০ টাকা বেতনে ঢাকায় আসার সুযোগ করে দেন। এরপর তিনি ঢাকায় চলে আসেন।

নিতুন কুন্ডুর সময়ে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক একই সঙ্গে পড়ানো হতো আর্ট কলেজে। আর্ট কলেজে ভর্তির পর খেয়ে না খেয়ে সিনেমার পোস্টার আঁকতেন, প্রতি বর্গফুট মাত্র ১ আনা। সারা রাত ধরে ব্যানার এঁকে সকালে আর্ট কলেজে ক্লাস করতে যেতেন। ক্লাস করা, ক্লাসের অতিরিক্ত কাজ করার মধ্য দিয়ে কষ্টের জীবন পার করেছেন তিনি। আর্থিক দৈন্য তাঁকে থামাতে পারেনি।

পোস্টারটি মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে

ষাটের দশকে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের অনেক প্ল্যাকার্ড–ব্যানার ছিল নিতুন কুন্ডুর আঁকা। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর কলকাতায় গিয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের তথ্য ও প্রচার বিভাগে কাজ করেন পটুয়া কামরুল হাসানের সঙ্গে। তাঁর আঁকা দুটি পোস্টার মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যাপক প্রচারিত হয়েছে। এখনো সেই পোস্টার দুটি মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘সদা জাগ্রত বাংলার মুক্তিবাহিনী’। এ ছাড়া তাঁর আঁকা একটি পোস্টারের বক্তব্য, ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার মুসলমান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিষ্টান—আমরা সবাই বাঙালি’।
আর্ট কলেজের সেরা ছাত্র

নিতুন কুন্ডু ঢাকায় আসেন ১৯৫৩ সালের শেষের দিকে। ১৯৫৪ সালে তিনি আর্ট কলেজে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন আর্ট কলেজের সেরা ছাত্র। ড্রয়িংয়ে তুখোড়, জলরঙে সাবলীল, আর তেলরঙে ছিল তাঁর মুনশিয়ানা। তিনি প্রচুর ছবি এঁকেছেন ক্লাসে ও ক্লাসের বাইরে। ১৯৫৯ সালে ঢাকার চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে পেইন্টিংয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন শিল্পী নিতুন কুন্ডু। তাঁর প্রচণ্ড ইচ্ছা ছিল, আর্ট কলেজে শিক্ষকতায় যোগ দেবেন, কিন্তু সেই ইচ্ছা তাঁর পূরণ হয়নি।

চাকরি ছেড়ে ব্যবসায়

ঢাকার মার্কিন তথ্যকেন্দ্র আমেরিকান কালচারাল সেন্টার ষাট ও সত্তরের দশকে ‘ইউসিস’ নামে পরিচিত ছিল। ১৯৫৯ সালে এখানে চাকরি নেন নিতুন কুন্ডু। ধাপে ধাপে চিফ ডিজাইনার হন তিনি। এ চাকরি ছেড়েই মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের তথ্য ও প্রচার বিভাগে যোগ দেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন। তবে মুক্তিযুদ্ধে মার্কিন বিরোধিতার কারণে মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে আর যোগ দেননি।

চাকরি করে জমানো টাকা দিয়ে ১৯৭৫ সালে যাত্রা শুরু করে নিতুন কুন্ডুর প্রথম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দ্য ডিজাইনার্স। ১৯৭৭ সালে নাম বদলে করেন আর্ট ইন ক্র্যাফট। জাতীয় চলচ্চিত্র পদক তৈরির কাজ করেছিল ওই প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া নানা রকম মেডেল, ক্রেস্ট, কোটপিন, ট্রফি ও প্লাক তৈরি করত তারা। মেটালের ওপর কাজ করার শখ ছিল নিতুন কুন্ডুর। কাঠের বিকল্প হিসেবে মেটাল আসবাবের কথা চিন্তা করেন তিনি। হঠাৎই ঢাকায় এক জাপানি কোম্পানির অফিস থেকে মেটাল চেয়ারের জন্য যোগাযোগ করা হয়। বানিয়ে দিতে রাজি হয়ে যান নিতুন কুন্ডু। এটি প্রশংসা কুড়ায়। এরপর আরও অনেকেই আসবাবের জন্য আসতে থাকেন তাঁর কাছে। ভিন্নধারার আসবাব তৈরি নিয়ে আগ্রহ বাড়তে থাকে তাঁর।

নিতুন কুন্ডু

আসবাবশিল্পে বিপ্লব ঘটায় অটবি

১৯৭৮ সালে ঢাকার নিউ এলিফ্যান্ট রোডে একটি মেটাল আসবাবের দোকান দেন নিতুন কুন্ডু। এটি ভালোভাবে চালুর পর শুরু হয় ‘অটবি’ গড়ার প্রস্তুতি। অটবি অর্থ অরণ্য। নিজেই এর লোগো তৈরি করেন। অনানুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৭ সালেই অটবি ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু হয়। তবে অটবি কোম্পানি নিবন্ধন নেয় ১৯৮৪ সালের সেপ্টেম্বরে। ওই সময় সরকারের পূর্তমন্ত্রী কারখানা তৈরির জন্য মিরপুরে নিতুন কুন্ডুকে জায়গার ব্যবস্থা করে দেন। ব্যাংক এগিয়ে আসে অর্থায়নে। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়ার পালা। অটবি শুধু একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ নয়, এটা বাংলাদেশের আসবাবশিল্পে এক অনন্য বিপ্লব ঘটায়। আসবাবে মানুষের রুচিবোধের পরিবর্তন ঘটিয়েছে অটবি।

সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে অটবি। ২৮৮টি শোরুম করা হয় ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায়। তবে গত কয়েক বছরে ব্যবসার ধরনে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। শোরুমের সংখ্যা কমিয়ে ১৫০টি নামিয়ে আনা হয়েছে এখন। ১৯৯৪ সালে প্রথম ইউক্রেনে আসবাব রপ্তানি করে অটবি। এর আগে ৮৪ সালে একটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশ নেয় তারা। তবে নিয়মিত রপ্তানি শুরু হয় ২০০৪ থেকে প্রতিবেশী দেশ ভারতের আগরতলায়। এখন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অটবির আসবাব যাচ্ছে। দেশটিতে অটবির ১০ জন পরিবেশক আছেন এখন। ভারতের বাইরে বিভিন্ন সময় নেপাল, কাতার, আরব আমিরাতে আসবাব রপ্তানি করেছে অটবি।

সার্ক ফোয়ারা, জাতীয় পদক ও স্বীকৃতি

অটবি স্টিলের টেবিল ল্যাম্প তৈরির মাধ্যমে তার কাজের সূচনা করেছিল। মাটি আর কাঠের নানা পণ্যের সঙ্গে তখন অটবিতে তৈরি হতো কোটপিন, ক্রেস্ট, ট্রফি, ঘর সাজানোর নানা সরঞ্জাম ও ধাতব আসবাব। জাতীয় চলচ্চিত্র পদক, প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ, একুশে পদক, নতুন কুঁড়ি পদক, শিল্প মেলার পদক তৈরি করে অটবি।
দেশ ও দেশের বাইরে তাঁর অনেক যৌথ ও একক প্রদর্শনী হয়েছে। ১৯৬৫ সালে তিনি জাতীয় চিত্রকলা পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী বা চিত্রকলায় স্বর্ণপদক পান। ১৯৭৪, ১৯৭৯ ও ১৯৮১ সালে ঢাকায় বাণিজ্য মেলার প্যাভিলিয়ন ডিজাইনের জন্য তাঁকে প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়।

আঁকাআঁকির বাইরে তাঁর তিনটি বিখ্যাত ভাস্কর্য এখন দেশ ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও আলোচিত। ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেলের মোড়ে ‘সার্ক ফোয়ারা’, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সাবাস বাংলাদেশ’ আর চট্টগ্রামে বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে ‘সাম্পান’।
নিতুন কুন্ডুর একটি নিয়মিত কাজ ছিল বিভিন্ন শিল্পমেলায় প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা। তাঁর প্যাভিলিয়নই প্রতিবছর সেরা পুরস্কার অর্জন করত। ষাটের দশক থেকে জীবনের শেষ পর্যন্ত নিতুন কুন্ডু কখনো অন্যের, কখনো নিজের প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন তৈরি করেছেন এবং শ্রেষ্ঠ পুরস্কার অর্জন করেছেন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ১৯৮১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এককভাবে প্রথম পুরস্কার লাভ করে অটবি। এরপরও বিভিন্ন সময় এ পুরস্কার পেয়েছে নিতুন কুন্ডুর প্রতিষ্ঠান।

অটবির সাভার কারখানা

দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতৃত্বে অটবি

দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ‘বড়বন্দর’ এলাকায় ১৯৩৫ সালের ৩ ডিসেম্বর জন্ম নেন নিতুন কুন্ডু। তাঁর বাবা জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুন্ডু ছিলেন একজন ধান-চালের আড়তদারি ব্যবসায়ী। মা বীণাপাণি কুন্ডু ছিলেন একজন সাধারণ গৃহিণী। তিন ভাই আর চার বোনের মধ্যে নিতুন কুন্ডু ছিলেন তৃতীয় এবং ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয়। নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০০৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর দুই সন্তান—মেয়ে অমিতি কুন্ডু ও ছেলে অনিমেষ কুন্ডু। স্ত্রী ফাল্গুনী কুন্ডু। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় নিতুন কুন্ডুর পরিবার দেশ থেকে বিতাড়িত এক কোটি শরণার্থীর মতো ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭২ সালের ৪ আগস্ট কলকাতার হাওড়ায় ফাল্গুনির বাবার বাসায় তাঁদের বিয়ে হয়।

নিতুন কুন্ডুর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় প্রজন্মের হাতে আসে অটবির নেতৃত্ব। ছেলে অনিমেষ কুন্ডু ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেন ২০০৬ সালে। এর আগে ২০০১ সালে তিনি অটবিতে যুক্ত হন। তাঁর নেতৃত্বে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবসায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে অটবি। কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম নামের নতুন কোম্পানি তৈরি করে অটবি। দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি নানা প্রতিকূলতায়। তাই লোকসান বিবেচনায় চালুর তিন বছরের মাথায় বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি। এ দুটি কেন্দ্রে মোট ২৯১ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হয় কোয়ান্টামকে। ব্যাংকের কাছে এখনো দায়গ্রস্ত বিদ্যুৎ কোম্পানিটি।

বাবার সফল ব্যবসায় দায়গ্রস্ত হয়ে পড়া নিয়ে কষ্ট আছে ছেলের। অনিমেষ কুন্ডু প্রথম আলোকে বলেন, বাবার মেধা, শ্রমে আসবাবশিল্পে বিপ্লব ঘটিয়েছে অটবি। তাঁর গড়ে তোলা ব্যবসা আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্য ছিল। তবে একটি ব্যর্থতার ধাক্কা অনেক কিছু শিখিয়েছে। ব্যবসায়িক সক্ষমতা বেড়েছে অটবির।

নতুন করে স্বপ্ন দেখছে অটবি

২০০৫ থেকে ২০০৮ সময়ে আসবাব থেকে সিরামিক বা পার্টিকেল বোর্ড তৈরির কারখানা গড়ার আগ্রহ ছিল অটবির। কিন্তু তখন কারখানার জন্য বিদ্যুতের নিশ্চয়তা ছিল না। দেশে ওই সময় ভয়াবহ লোডশেডিং। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক গুরুত্ব দেয়। আর এতেই আগ্রহী হয়ে বিদ্যুৎ খাতের দরপত্রে অংশ নিয়ে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পায় তারা।
বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে লোকসানের প্রভাব পড়ে অটবির আসবাব ব্যবসায়ও। সংকট কাটিয়ে উঠতে ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা বাড়ানোর দিকে জোর দেয় নতুন প্রজন্ম। অপচয় কমিয়ে আনা হয় ব্যাপকভাবে। তিনটি কারখানাকে সমন্বয় করে দুটি কারখানায় নিয়ে আসা হয়। ব্যাংকের দায় শোধ করতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবসায় নতুন করে নামছে অটবি। ইতিমধ্যেই ফার্নেস তেলনির্ভর ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। অর্থায়ন নিশ্চিত হলেই এর কাজ শুরু হবে।
অনিমেষ কুন্ডু বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবসায় অভিজ্ঞতার ঘাটতিসহ নানা প্রতিকূলতা ছিল। ব্যবসায় ওঠানামা থাকবেই। সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হয়ে যায়নি। তবে অনেকটা গুছিয়ে উঠেছে অটবি। এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে নতুন করে বিনিয়োগ সহায়তা দরকার।