আমদানিতে শুল্ক-কর পরিশোধ করার ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
কমলাপুরের আইসিডিতে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে সব ধরনের বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করা হয়। কিন্তু তার কাঙ্ক্ষিত সুফল গত দুই বছরে মেলেনি।
আমদানিকারকেরা প্রস্তুতি নিন। মালামাল আমদানি করলে পে–অর্ডার বা চালানের মাধ্যমে শুল্ক-কর পরিশোধ করা যাবে না। শুল্ক-কর পরিশোধ করার ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শুল্ক-কর ও মাশুল পরিশোধ করা যাবে।
কমলাপুরের আইসিডিতে ২০২১ সালের এপ্রিল মাস থেকে সব ধরনের বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হবে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে। এটি পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হবে। ওই বছরের জুলাই থেকে দেশের সব শুল্ক হাউস ও শুল্ক স্টেশনে ২ লাখ টাকার বেশি শুল্ক-কর হলে ই-পেমেন্ট করতে হবে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ই-পেমেন্টের মাধ্যমে শুল্ক-কর পরিশোধের সীমা থাকবে না। এর পাশাপাশি অন্যান্য মাশুলও ই-পেমেন্টের আওতায় চলে আসবে।
এখন ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু থাকলেও অর্থ পরিশোধ বাধ্যতামূলক নয়। ফলে ই-পেমেন্ট করেন এমন আমদানিকারকের সংখ্যা খুবই কম। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু করা হয়। কিন্তু তার কাঙ্ক্ষিত সুফল গত দুই বছরে মেলেনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ই–পেমেন্টের মাধ্যমে ১ হাজার ১৩০ কোটি টাকার রাজস্ব পাওয়া গেছে। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৪ হাজার ১১০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। বর্তমানে ১৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ই-পেমেন্ট ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে।
ই-পেমেন্ট ব্যবস্থায় আমদানিকারক বা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের ব্যাংক হিসাব থেকে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি ট্রেজারিতে অর্থ পরিশোধ করা যায়। ফলে আমদানিকারক বা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নির্বিঘ্নে দ্রুত রাজস্ব পরিশোধ করতে পারবেন। এতে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে শুল্ক-কর পরিশোধে জালিয়াতির ঝুঁকি কমে যাবে। কিছু পণ্য রপ্তানিতেও শুল্ক দিতে হয়।
এনবিআরের শুল্ক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আমদানিকারকেরা ই-পেমেন্ট করলে দ্রুত রাজস্ব পরিশোধ করতে পারবেন। এতে জাল কাগজপত্র জমা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকির প্রবণতাও কমে যাবে।
আমদানি পর্যায়ে আমদানি শুল্কের পাশাপাশি সম্পূরক শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট, অগ্রিম করসহ বিভিন্ন ধরনের শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হয়। চলতি ২০২০–২১ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে, যা গত অর্থবছরের প্রকৃত রাজস্ব আদায় থেকে ৫১ শতাংশের বেশি।