অর্থনীতি আসবে জাপানি বিনিয়োগে

সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) প্রতিনিধিদল। প্রথম আলো
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) প্রতিনিধিদল।  প্রথম আলো

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে শিকড়চ্যুত না করে ঘরের কাছেই কর্মের সুবিধা সৃষ্টিতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে গড়ে উঠছে বেসরকারি পর্যায়ে দেশের বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন’। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে সয়দাবাদ এলাকায় ১ হাজার ৪১ একর জমিতে বর্তমানে পুরোদমে চলছে মাটি ভরাটের কাজ।

সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোগত সুবিধার পাশাপাশি জল, স্থল এবং রেলপথে উৎপাদিত পণ্য সরবরাহের সুবিধা নিয়ে আগামী দুই বছরের মধ্যে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা গড়ে উঠবে। এখানে উত্তরাঞ্চলের প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার এ মেগা প্রকল্পে ৪০০ ভারী শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। এখান থেকে প্রায় চার বিলিয়ন ডলারের পণ্য উৎপাদিত হবে। ইতিমধ্যেই দেশ–বিদেশের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে কর্তৃপক্ষ।

দেশের ১১টি শিল্প উদ্যোক্তার সমন্বয়ে বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি বিনিয়োগ আসবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। জাপানের বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে ভারী শিল্পসহ কৃষিপণ্যজাত শিল্প খাতে বিনিয়োগের চিন্তাভাবনা করছে।

গত শনিবার বিকেলে এই মেগা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে এমন আশার কথা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। দলটির প্রধান উপসচিব এবং বেজার ব্যবস্থাপক (এমআইডিআই সেল) ও জাপানে বাংলাদেশি দূতাবাসের সাবেক কমার্শিয়াল কাউন্সেলর মোহাম্মদ হাসান আরিফ জানান, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার শুধু সিরাজগঞ্জের জন্য নয়, পুরো উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভবিষ্যতে বড় ভূমিকা পালন করবে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ জন্য বেজার সার্বিক সহযোগিতা চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। জাপানের বিশ্বখ্যাত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। এই অঞ্চল অনন্য ভৌগোলিক সুবিধার পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি–সুবিধা রয়েছে। তেমনি সড়ক, রেল ও নৌপথ ব্যবহারের যে পরিবেশ রয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হবে। এ লক্ষ্যেই জাপানের বিনিয়োগকারীরা সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলটি নিয়ে বেশ আশাবাদী। তারা ভারী শিল্প ও কৃষিপণ্যজাত শিল্প স্থাপনে উৎসাহ দেখিয়েছে।

এ সময় সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিচালক শেখ মনোয়ার, প্রতিষ্ঠানটির উপদেষ্টা শহিদুল ইসলামসহ বেজা এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোনের পরিচালক শেখ মনোয়ার বলেন, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ঘিরে যে নদীবন্দরটি স্থাপন হচ্ছে, এই বন্দর থেকে বিভিন্ন সমুদ্রবন্দরে সহজেই পণ্য পৌঁছানো যাবে।