ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের (ডিএজি) পদ হারানো এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার মার্কিন দূতাবাসে যাওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেছেন, ‘আমেরিকান এম্বাসিতে তাকে (এমরান) জায়গা দেওয়াটা ঠিক হয়নি। তার পরিবার, বাচ্চাসহ সেখানে গিয়েছে, কেন? এটি একেবারে পূর্বপরিকল্পিত ছিল, তা প্রমাণ হয়েছে।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে অবস্থিত উত্তর হলে আজ সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির এসব কথা বলেন।
‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিতের দাবিতে বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট নাগরিক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রেরিত খোলাচিঠির প্রতিবাদে’ সুপ্রিম কোর্টের ৫১০ আইনজীবীর বিবৃতির বিষয়ে জানাতে ওই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে ৪ সেপ্টেম্বর বক্তব্য দেন এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি।’
রাষ্ট্রের একজন আইন কর্মকর্তার এমন বক্তব্য রাজনৈতিক ও আইন অঙ্গনে শোরগোল তৈরি করে।
এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে ৭ সেপ্টেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, যা পরদিন জানাজানি হয়। সেদিন বিকেলে এমরান স্ত্রী-সন্তানসহ মার্কিন দূতাবাসে যান।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশের নিরাপত্তায় এমরান পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দূতাবাস ছেড়ে যান। এর আগে বিকেলে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারকে এক খুদে বার্তার মাধ্যমে মার্কিন দূতাবাসে অবস্থানের কথা জানান এমরান।
সেখানে এমরান লেখেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে (শুক্রবার) পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে...। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন ধরে অনবরত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ‘যে বিবৃতি উনি (এমরান) দিয়েছেন, এটি পুরোপুরি আইনের লঙ্ঘন। উনি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে থেকে এ ধরনের বিবৃতি দিতে পারেন না।…তাঁর উদ্দেশ্যটা খারাপ ছিল। বিতর্ক সৃষ্টি করার জন্য এটি করেছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ‘ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে, এ ধরনের তথ্য আমাদের কাছে আসেনি।...প্রথমে যখন তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তখন সে বলেছে ভয়ভীতি নেই এবং কেউ তাকে চাপ দেয়নি। পরবর্তীতে কী ঘটেছে, এখন পর্যন্ত তা বলেনি।’
এমরান মার্কিন দূতাবাসে নিজ উদ্যোগেই গিয়েছিলেন উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, ‘তার (এমরান) উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য সে ওখানে গিয়েছিল। কারও চাপে বা কারও কারণে গিয়েছে, এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি।’
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে এমরানকে এখনো বহিষ্কার করা হয়নি—এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের তিনি (এমরান) সদস্যই নন।