রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা প্রজ্ঞাপন নিয়ে পৃথক দুটি রিট কাল বুধবার শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার শুনানির এই দিন নির্ধারণ করেন।
উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে কাল বেলা ১১টায় শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ৭ মার্চ একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের ১২ মার্চের কার্যতালিকায় (১৬৯ নম্বর ক্রমিকে) রিটটি ছিল। বেঞ্চের একজন বিচারপতি রিটটি শুনতে বিব্রত বোধ করেন।
এরপর রিট শুনতে অপারগতা প্রকাশ করে আদালত প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান। গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি এ রিট শুনতে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে পাঠান।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা-সংক্রান্ত ইসির প্রজ্ঞাপন নিয়ে আবদুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবিরসহ সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী ১২ মার্চ আরেকটি রিট করেন। গতকাল বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে এই রিটটি জমা দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, বেঞ্চটির আজকের কার্যতালিকায় ছয় আইনজীবীর করা রিট ৯৯ নম্বর ক্রমিকে ছিল। আরেক আইনজীবীর করা রিটটি বেঞ্চটির কার্যতালিকায় ১৫৪ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। অন্যদিকে, একটি রিটের পক্ষে আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী ও অপর রিটের পক্ষে আইনজীবী এম এ আজিজ খান উপস্থিত ছিলেন।
পরে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিট আবেদনকারীরা শুনানির জন্য সুনির্দিষ্ট সময় নির্ধারণের আরজি জানান। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করবেন বলে জানানো হয়। পরবর্তী সময়ে অ্যাটর্নি জেনারেল ও রিট আবেদনকারীদের উপস্থিতিতে কাল বুধবার বেলা ১১টায় শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।’
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে। নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ২৪ এপ্রিল থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করার কথা।
ছয় আইনজীবীর করা রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, ইসির ১৩ ফেব্রুয়ারির প্রজ্ঞাপন ও মনোনয়নপত্র পরীক্ষাসংক্রান্ত ১৯৯১ সালের আইনের ৭ ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেওয়া থেকে বিরত রাখার আরজি রয়েছে রিটে। নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও মো. সাহাবুদ্দিনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
আইনজীবী এম এ আজিজ খানের করা রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর ১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইনের ৭ ধারা অনুসারে মো. সাহাবুদ্দিনকে যোগ্য ও একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইসির প্রজ্ঞাপন কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।