বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে নেভাল আর্কিটেকচারে সদ্য পাস করা মো. সামিউন নূর ইসলাম চুয়াডাঙ্গায় গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
গতকাল শুক্রবার ঢাকায় ফেরার জন্য দর্শনা স্টেশন থেকে বেলা সাড়ে ৩টায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেছিলেন তিনি। সেই ট্রেন ঢাকায় ঢুকে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছানোর অল্প কিছুক্ষণ আগে গোপীবাগ এলাকায় সেটিতে আগুন লেগে যায়। ট্রেনে আগুনে মারা গেছেন চারজন।
ট্রেনের যেসব কামরায় আগুন লেগেছিল, সেগুলোর একটিতে ছিলেন সামিউন। তিনি রাতে প্রথম আলোকে বলেন, কামরার পেছনের দরজার কাছে বসেছিলেন। আগুন ধরেছিল সামনের দিকে। রাত ৯টা ৪ মিনিটের দিকে কামরায় আগুন ধরলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত তিনি ল্যাপটপের ব্যাগটা নিয়ে দরজায় চলে যান। ট্রেন তখনো চলছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় সবাই পরের বগিতে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। কারণ, মুহূর্তে আগুন বেড়ে যাওয়ায় সবার নিশ্বাস নিতেও অসুবিধা হচ্ছিল। কোনো গ্যাস বা কিছু দিয়েছিল, যার জন্য নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না।’
এ সময় দরজায় দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে মুখ রেখে শ্বাস নিচ্ছিলেন জানিয়ে এক ফেসবুক পোস্টে সামিউন লিখেছেন, ‘অনেক চিৎকার করছিলাম, আগুন লেগেছে, থামান বলে। আমার জ্ঞান সম্ভবত সম্পূর্ণ ছিল না। কেউ চেইনও টান দেয়নি। পরে দুইজন লাফ দিল, আমি দেইনি। কারণ ভেবেছি, লাফ দিলেও মারা যাব। এদিকে আগুন আমার অব্দি চলে এসেছিল। ট্রেন ২ থেকে ৩ মিনিট পর থামলে আমি আর দাঁড়াইনি।’
ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার কথা জানিয়ে সামিউন লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ বাঁচাইছে। আমার একটা ব্যাগ বাদে সব ঠিক আছে। তবে নিশ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল। অনেক সময় ধরে কালো কালো কাশি উঠছিল।’ রাতে বাসায় ফেরার পর সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন সামিউন।