‘মৃত ও গুম হওয়া’ ব্যক্তিদের সাজা দেওয়া এবং ‘মিথ্যা মামলায় সাজা’ দেওয়া সংশ্লিষ্ট আদালতগুলোকে বিচারিক ক্ষমতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। একই সঙ্গে সেই রায়গুলো বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ‘মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বিএনপির মৃত ও গুম হওয়া নেতাসহ অন্য নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক উদ্দেশ্যমূলক রায় ও সাজা প্রদানের বিষয়ে’ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ওই সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল। তিনি দাবি করেন, ‘সাজা প্রদান করা প্রতিটি মামলা আইনজীবী হিসেবে পর্যালোচনায় দেখছি, সাজাপ্রাপ্ত রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের সংশ্লিষ্টতা নেই। কোনো ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণ করতে হয় সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে। অধিকাংশ মামলায় সাক্ষী হিসেবে শুধু পুলিশ সদস্যকে হাজির করিয়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। এমনকি ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত বিচারিক স্তরগুলোও অনুসরণ করা হয়নি। বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই তড়িঘড়ি করে বিএনপির নেতাদের সাজা দেওয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, গতকাল ঢাকার দুটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চারটি মামলায় চার বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপির নেতা আবু তাহের দাইয়া, ১০ বছর আগে গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমন এবং আট বছর আগে গুম হওয়া আমিনুল ইসলাম জাকিরসহ ৫৪ নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ নিয়ে গত ২ মাসে ঢাকার আদালতে ২১টি মামলায় বিএনপির ২৭১ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, বিগত ১ বছরে ২৯টি মামলায় ৩০৪ জনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
কায়সার কামাল অভিযোগ করেন, ‘সরকারের অশুভ পদক্ষেপের সবচেয়ে বড় শিকার আমাদের বিচারব্যবস্থা, বিশেষ করে নিম্ন আদালতগুলো।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দেওয়া সাজার রায়গুলো আইনানুগ হয়নি বরং সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। মৃত ও গুম ব্যক্তিদের পাশাপাশি মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারিক ক্ষমতা থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ ওই রায় বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, বিএনপি ও সমমনা আইনজীবীদের মোর্চা ইউনাইটেড ল ইয়ার্স ফ্রন্টের সহ–আহ্বায়ক সুব্রত চৌধুরী, ফোরামের সহসভাপতি এম বদরুদ্দোজা, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কুদ্দুস ও ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।